‘নাটকের সাথে আপস না করা’ মাসুম আজিজকে শেষ বিদায়

29

ভালোবাসার অশ্রু আর ফুলেল শ্রদ্ধায় একুশে পদক জয়ী অভিনেতা মাসুম আজিজকে শেষ বিদায় জানিয়েছে দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তার মরদেহ নেওয়া হলে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ বিদায় জানায়।সেখানে সহকর্মীরা স্মরণ করেন অভিনয়ে নিবেদিত মাসুম আজিজের ‘আপসহীন’ এক জীবনের কথা।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মাসুম আজিজের জানাজা হয়। এরপর স্বজনরা মরদেহ নিয়ে পাবনার বোনাইনগর ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হন। মাসুম আজিজকে বিদায় জানাতে এসে ‘সাচ এ শর্ট লাইফ’ বলেই কেঁদে ফেলেন নাট্যকার মামুনুর রশীদ। তিনি বলেন, “মাসুমের চলে যাওয়া বেদনার, ভীষণ কষ্টের। মাসুম বৈষয়িকভাবে সফল হতে পারেনি। দারিদ্রের সাথে সংগ্রাম করতে হয়েছে। কিন্তু ওর সাফল্য এসেছে শিল্পচর্চায়। পুরো পরিবারটিই একটা শিল্প পরিবার।”
দীর্ঘদিন ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন অভিনেতা মাসুম আজিজ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত সপ্তাহে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে সোমবার তার মৃত্যু হয়। শহীদ মিনারে এই অভিনেতাকে বিদায় জানাতে এসে সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “আমাদের দেশে শুধু নাটক করে বেঁচে থাকার প্রত্যয় আমরা অনেকেই চলতে পারিনি। কিন্তু মাসুম চলেছে, সারাজীবন নাটক নিয়েই থেকেছে। আমরা অনেকেই আপস করেছি। জীবনের গতির সাথে মিলিয়ে চলবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মাসুমকে কখনও আপস করতে দেখিনি। “মাসুম আজিজের সাথে কয়েকটা কাজও করেছি। তার চলে যাওয়া মানে অঙ্গীকারবদ্ধ এক শিল্পীর চলে যাওয়া। তার ভাবনায় সব সময় দেশ এবং মানুষ ছিল।”
অভিনেতা, নাট্যকার রামেন্দু মজুমদার বলেন, “নাটকের পাশাপাশি গান করেছে মাসুম। নানা প্রতিক‚লতায়ও নাটক করেছে, অভিনয় করেছে মাসুম। সে তরুণদের অনু প্রাণিত করতে পারত। মাসুম আজিজের মৃত্যুতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হল।” শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে তিনি কখনও আপস করেননি। অনেক প্রতিক‚ল অবস্থায় দাঁড়িয়েও তিনি অসা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেছেন।”