নন্দিত কর্মবীর এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি

100

আশরাফ হিমেল

জনপ্রিয়তা মানুষের একটি বিশেষ গুণ। সমাজের সব মানুষ জনপ্রিয় হতে পারেনা। মনবিজ্ঞানী ডেল কার্নেগী তার ‘প্রতিপত্তি ও বন্ধুলাভ’ গ্রন্থে লিখেছেন জনপ্রিয় হতে হলে মানুষের বিশেষ কয়েকটি গুণ স্বভাবগতভাবে থাকতে হয় বা অর্জন করতে হয়। যেমন, মনোযোগ দিয়ে মানুষের কথা শুনতে হয়, কেবল নিজের বিষয় নিয়ে কথা না বলা, মানুষের সুখ-দুখে অংশগ্রহণ করা, অহেতুক তর্কযুদ্ধে না জড়ানো, গঠনমূলক সমালোচনা করা, অন্যের আশা-আকাক্সক্ষা পূর্ণ করে দেয়া ইত্যাদি গুণ থাকলে একজন মানুষ জনপ্রিয় হয়। কথাগুলো এ জন্যই উপস্থাপন করলাম যে, আজকে যাকে নিয়ে একটু আলোচনা করতে চাই তিনি হচ্ছেন রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। যার মধ্যে উক্ত গুণাবলির অধিকাংশই বিদ্যমান, আর এ কারণেই তিনি সমাজে হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ধনী-দরিদ্র সকল স্তরের মানুষের কাছে হয়ে ওঠেছেন সমান জনপ্রিয়। সমাজে দেখা যায় একজন আদর্শ কৃষক, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, রাজনীতিবিদ বা ব্যবসায়ী স্ব স্ব বিষয়ে পারদর্শী। তার পেশা ব্যতীত অন্য বিষয়ে একেবারে আনকোড়া। মনবিজ্ঞান বলে জীবনে চলার পথে সকল বিষয়েই দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী জীবন চলার পথে রাজনীতি, সমাজনীতি, পরিবার, লেখাপড়া, শিক্ষার প্রচার-প্রসার এমনকি সময়ক্ষণে রান্নাবান্না প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আছে একটা পারঙ্গম দক্ষতা। বুদ্ধির বিচারে মানুষ দু-শ্রেণির, স্থুলবুদ্ধি ও সূ²বুদ্ধিসম্পন্ন। ¯্রষ্টার সৃষ্টিতে স্থুল বুদ্ধির মানুষের সংখ্যাই বেশি। সূ²বুদ্ধির মানুষ খুবই বিরল এবং এরাই সমাজের করিতকর্মা পুরুষ। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী তেমনই একজন মানুষ যার জীবনে চলার পথে শিক্ষা সংস্কৃতি,রাজনীতি, ক্রীড়া,সমাজসেবায় সূ²বুদ্ধির স্বাক্ষর রেখেছেন। জননেতা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর প্রশংসা করলে পরোক্ষভাবে নিজের উপরই এসে পড়ে তাই আমি তার গুণগান করবো না। মনীষী রুডিয়ার্ড ক্লিপিং বলেছেন—‘মানুষের প্রসংশার কিছু থাকলে তা আমরা এড়িয়ে চলি, আবার তারই নিন্দার কিছু পেলে মুখে খই ফুটাই। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কমবেশ তার সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে। আমার কাছে মনে হয় তিনি একজন সফল অভিভাবক, সফল সমাজহৈতষী সর্বোপরি একজন সফল সার্থক জননেতা। কারো করুণায় নয়, নিজের যোগ্যতা মেধা, প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে জননেতা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম-২৮৩ নং নির্বাচনী এলাকা রাউজান ০৬ আসন থেকে ৪ বার নির্বাচিত হয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে হয়ে উঠেছেন ঐ অঞ্চলের গণমানুষের আস্থা বিশ্বাস আর ভালোবাসার প্রতীক। যা একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক জীবনে বিরাট সাফল্য। প্রিয় এই নেতা মন্ত্রিত্বের জন্য রাজনীতি করেন না, মন্ত্রী না হলে এলাকার উন্নয়ন সম্ভব হবে না তা তিনি বিশ্বাস ও করেন না। উনার রাজনৈতিক ভিশন হচ্ছে নির্বাচনী এলাকার গণমানুষের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায় ও তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা। নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য,নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনয়নে কাজ করা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, রাউজান ছিল সন্ত্রাসের জনপদ। প্রতিনিয়ত শোনা যেত সন্তানহারা মায়ের কান্না, কাঁদতো বোনরা। সাড়ে তিনশ লোক এখানে মারা গেছে। ফিলিস্তিনের মতো লোক মারা হয়েছে রাউজানে। দিন পাল্টে গেছে। আজ আর রাউজানে কাউকে কাঁদতে হচ্ছে না। রাউজান আজ পরিণত হয়েছে শান্তির জনপদে। প্রবাদ আছে পুরান চালে ভাত বাড়ে। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বেলায়ও তাই। চট্টগ্রাম জেলার এই কৃতি সন্তান বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখ চার বারের সফল নির্বাচিত সাংসদ। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিসহ কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সদস্য পদে নিয়োজিত আছেন। কয়েকবছর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন হিউম্যান রাইটস ফর পার্লামেন্ট’র প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কৃষি-মৎস ও বৃক্ষরোপণসহ চারবার জাতীয় পদকে ভূষিত হয়েছেন। যা এই অঞ্চলের মানুষের মুখকে উজ্জ্বল করেছে, প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশ বিদেশে। কোন কোন পুরস্কার মানুষকে দামি করে, আর কোন কোন মানুষ পুরস্কারকে দামি করে। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী যে পুরস্কার পেয়েছেন, সে পুরস্কার কিন্তু তাকে দামি করেনি। বরং তিনিই পুরস্কারকে দামি করেছেন। রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জননেতা দীপংকর তালুকদার এমপি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী শুধু রাউজানের হালদা নিয়ে নয়, রাঙামাটির লেকের মাছ নিয়েও কাজ করেন। তিনি শুধু চুয়েট পর্যন্ত ট্রেন লাইন নয়, রাঙামাটি পর্যন্ত ট্রেন লাইন নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাজ করছেন। পাহাড়ে ট্রেন কিভাবে যাবে প্রশ্ন তোলা হলে তিনিই উত্তর দিয়েছেন যে যদি দার্জিলিং এর ৭ হাজার ২০০ ফুট পাহাড়ে ট্রেন যেতে পারে তাহলে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে আড়াই হাজারে যেতে পারবে না কেন? সাংসদ দীপংকর তালুকদার বলেন, রাউজান পর্যন্ত চার লেনের রাস্তাকে রাঙামাটি পর্যন্ত নিয়ে যেতে আমার চেয়ে বেশি আগ্রহী ফজলে করিম। এতে প্রমাণিত হয়, তিনি শুধু রাউজানেরই এমপি নন, তিনি পুরো দেশের এমপি। যেখানেই মানুষের যা প্রয়োজন তার যোগান দিতে এমপি ফজলে করিমের তৎপরতা আমাকে মুগ্ধ করে। দীপংকর তালুকদার বলেন, আমারও একটি পুরস্কার পেতে বড় ইচ্ছে করে। পুরস্কার পেতে ভালোও লাগে। আপনাদের এমপি আমার হুজুর, আমার থেকে লেখাপড়ায় এক বছরের জুনিয়র ছিলেন। রাজনীতিতেও আমার জুনিয়র। তিনি চার চারটি জাতীয় পুরস্কার পেয়ে গেলেন। আমি একটিও পেলাম না। কিন্তু আপনাদের সাথে এই পুরস্কার প্রাপ্তি উদযাপন স্বপ্ন ছোঁয়ার মতো আনন্দিত করছে আমাকে। তিনি বলেন, ফজলে করিম চৌধুরীর মেধা ও কাজের স্বীকৃতি হিসাবে এসেছে চারটি জাতীয় পদক। তার চিন্তা চেতনায় আছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম। তিনি কাজ করেন পদক প্রাপ্তির লক্ষ্য নিয়ে নয়, নিজের মনে লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন,গণমানুষের কল্যাণের কথা বিবেচনায় তিনি কাজ করছেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ফজলে করিম চৌধুরীকে আরো বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ দিলে সমাজ, দেশ এবং মানুষ উপকৃত হবে।
সদা সহাস্যমুখ এই সাংসদ রাউজান নির্বাচনী এলাকার জনমানুষের জীবনমান উন্নয়নে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। কাজ করেছেন নির্বাচনী এলাকায় রাস্থাঘাট, ব্রিজ কালবার্ট, বিদ্যুৎগ্যাস, স্কুল কলেজ মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও এর মান উন্নয়নে। পাশাপাশি পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, হাট বাজার, কৃষিকাজ উন্নয়ন, বুরো মৌসুমে সেচ ব্যবস্তাসহ সার ও বীজের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ বিগত দিন থেকে শুরু করে আজ অবধি তার রুটিন কাজ। ২০১৮ সালে
প্রাণের টানে পায়ে হেঁটে রাউজানের ঘরে ঘরে’ শিরোনামে ৪ দিনব্যাপী ১৫০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে রাউজান পরিদর্শনের নজির সৃষ্টি করেন এই কিংবদন্তি সাংসদ। ব্যক্তি-পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জননেতা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন, দেশ-বিদেশে তারা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। বিশেষ করে তার জ্যেষ্ঠপুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী লাখো তারুণ্যের আইডল, যিনি সমাজসেবায় অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসের উপর ডিগ্রী নেওয়া এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম রাউজান উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের একটি ছোট গ্রাম থেকে উঠে আসা রাউজানের গণমানুষের অবিসংবাদিত জননেতা। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সফল চেয়ারম্যান, সৎ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ জননেতা এম এ সালাম এক অনুষ্ঠানে রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে একজন কর্মবীর উল্লেখ করে বলেন, ফজলে করিম চৌধুরী চার-চারবার জাতীয় পুরস্কার পেয়ে আমাদের গর্বিত করেছেন। এই সম্মান শুধু রাউজানের নয়, পুরো চট্টগ্রামের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফজলে করিম চৌধুরীকে পুরস্কৃত করে আমাদের সবাইকে সম্মানিত করেছেন।
এম এ সালাম বলেন, ফজলে করিম চৌধুরীর শত্রুও স্বীকার করবেন যে রাউজানে এমন অনেক কাজ হয়েছে যা ছিল অসাধ্য। ফজলে করিমই অসাধ্য সাধন করেছেন। দেশের ৩০০ এমপি যদি এভাবে কাজ করতেন তাহলে উন্নত বিশ্বে পরিণত হতে আমাদেরকে ২০৪১পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো না। আমরা কোন শৃঙ্খলা মানি না মন্তব্য করে এম এ সালাম বলেন, কিন্তু এই রাউজানে সবকিছুতেই শৃঙ্খলা আছে। ফজলে করিম চৌধুরীর কঠোর এবং দৃঢ় নেতৃত্ব রাউজানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। শেষ করতে হবে, শেষ করতে চাই চার্লস ডি গল এর একটি উক্তি টেনে “একজন সত্যিকারের নেতা সবসময়ই একটি চমক রেখে দেন যা অন্যারা বুঝে উঠতে পারে না, কিন্তু তা ঠিকই জনসাধারণের আকৃষ্ট করে থাকে” এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী শেষনিঃশ্বাসেও তার স্বপ্নের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন রাউজান তথা বীর চট্টলার গণমানুষের কাছে। কারণ রাজনীতি সমাজনীতি সামগ্রিক উন্নয়নে তার চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে-দুর্নীতি শোষণমুক্ত অর্থনীতিতে স্বনির্ভর সোনার বাংলাদেশ গড়া। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে সরকারের গৃহীত কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন। সর্বোপরি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশপ্রেমে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এমন একটি সুষম সমাজ দেশ জাতি প্রতিষ্ঠা পাক যা বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।

লেখক : সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ