নদী ভরাট ও পরিবেশ বিপর্যয়ে বিপন্ন ১৭ প্রজাতির দেশীয় মাছ

13

সবুর শুভ

দখল আর দূষণে বিপন্ন অবস্থা চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ নদীর। এসব নদী হচ্ছে, কর্ণফুলী, হালদা, সাঙ্গু, শিকলবাহা ও চাঁদখালী। নদীর গভীরতা, পানি প্রবাহ ও পরিবেশের উপর মাছের টিকে থাকা নির্ভর করে। তাই যেসব মাছ কর্ণফুলী ও সাঙ্গু নদীতে এখনো পাওয়া যাচ্ছে তা আবার শিকলবাহা ও চাঁদখালী নদীতে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব নদীর গভীরতা কম। এছাড়া সমুদ্রের নোনা পানির কিছু মাছ মিঠা পানিতে নিজেকে সয়ে নিয়েছে। এসব মাছ কর্ণফুলী নদীতে বেশি পাওয়া যায়। যেমন- লারকেইল্লা কোরাল ও নলুয়া। এ সংক্রান্ত একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য।
তথ্য মতে, ২০০০ সালের মে মাস থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কর্ণফুলী, হালদা, সাঙ্গু, শিকলবাহা ও চাঁদখালী নদীতে এ গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন নদী গবেষক ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) সাবেক প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন নদী গবেষক ড. মোহাম্মদ আরশাদ উল আলম।
পাঁচ নদীতে থাকা মাছের উপর পরিচালিত এ গবেষণায় মোট ১৩০ প্রজাতির মাছ, চিংড়ি ও কাঁকড়ার খোঁজ পাওয়ার তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। এর মধ্যে ১১২ প্রজাতির মাছ এবং ১৮ প্রজাতির চিংড়ি ও কাঁকড়া রয়েছে। এতে দেখা গেছে, গত এক দশকে অন্তত ১৭ প্রজাতির দেশীয় মাছ ‘প্রায় বিলুপ্ত’ হবার পথে রয়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
তথ্য মতে, বাইম, অলুয়া, গ্যাং মাগুর, গুইলসা টেংরা, বাঘা আঁইড়, চরপ মহাল, নাক কাটা, ঢেলা, শিং ওয়ালা রুই, চেপচেলা, কালা বাটা, ঘোড়া চেলা, শিল বাইলা, চেংমাছ, টাকি, ভোট বাইলা, শোলসহ বেশ কিছু মাছ বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী গবেষণায় বলেন, আমাদের গবেষণায় পাঁচ নদীতে মোট ১৩০ প্রজাতির মাছ, চিংড়ি ও কাঁকড়ার খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে ১১২ প্রজাতির মাছ ও ১৮ প্রজাতির চিংড়ি ও কাঁকড়া রয়েছে। এ ১১২ প্রজাতির মাছের মধ্যে নাইলোটিকা মাছকে মারাত্মকভাবে বিপন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। এছাড়া ৬ প্রজাতির মাছ বিপন্ন ও ১১ প্রজাতির মাছ অস্তিত্বের হুমকিতে বা অরক্ষিত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, সাঙ্গু নদীতে আছে ১১১ প্রজাতির মাছ ও ১৮ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়া। কর্ণফুলী নদীতে ১১০ প্রজাতির মাছ ও ১৮ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়া আছে। এছাড়া শিকলবাহা নদীতে ৭৪ প্রজাতির মাছ ও ১১ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়া ও চাঁদখালী নদীতে ৭২ প্রজাতির মাছ ও ১১ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়ার অস্তিত্ব রেকর্ড করা হয়েছে। হালদায় ৮৩ প্রজাতির মাছ ও ১০ প্রজাতির চিংড়ি-কাঁকড়া পাওয়া গেছে।