নতুন ২০ বই সালফি পাবলিকেশন্সে

113

বইমেলা উপলক্ষে নতুন ২০টি বই প্রকাশ করেছে সালফি পাবলিকেশন্স। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম চত্বরে অমর একুশে বইমেলায় সালফির স্টলে ঢু মারছেন বইপ্রেমীরা।
সালফি পাবলিকেশন্সের স্টলে বই দেখছেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিমুল হক। তিনি বলেন, অনেকগুলো বই দেখেছি। কয়েকটি বই কেনার ইচ্ছে আছে। স্টলটির মধ্যে ভালো কিছু বইয়ের সংগ্রহ আছে।
সালফি পাবলিকেশন্সের স্টলে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে বিলবোর্ডের শব্দনুপুর, আল মাহমুদ-কবি ও কথাশিল্পী, জীবনের জলচাপ, গ্যাং লিডার, স্লো-পয়জনিং, প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ প্রভৃতি বইয়ের।
সালফি পাবলিকেশন্স’র সত্ত¡াধিকারি মিনহাজুল ইসলাম মাসুম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ২০টি নতুন বই প্রকাশ করা হয়েছে। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি ধর্মীয় বইও প্রকাশ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের আরো ব্যাপক পরিকল্পনা আছে।
বইমেলা সম্পর্কে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ইতিহাসে এ ধরনের বইমেলা যুগান্তকারী। এ মেলা ভবিষ্যতের জন্য একটি বিরাট দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য বইমেলা অন্যন্য ভূমিকা রাখবে। মেলা ইতিমধ্যে জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বিপুল বইপ্রেমী মেলায় ভিড় করছেন।
মিনহাজুল ইসলাম মাসুম নিজেও একজন লেখক ও প্রকাশক। গত ২/৩ বৎসর যাবৎ প্রকাশনার সাথে জড়িত হয়েছেন।
সালফি পাবলিকেশন্স থেকে এ পর্যন্ত ৩০টির মতো বই প্রকাশ, সম্পাদনা ও পরিবেশনা করা হয়েছে। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে, হৃদয়ে বাংলাদেশ, গণতন্ত্র সরকার রাজনীতি, আমরা কেন বুঝতে পারছি না, বক্ষে আমার কাবার ছবি: চক্ষে মোহাম্মদ রাসূল (সা.), যেমন বাংলাদেশ চাই, রাসূল (সা.) আমার ভালবাসা, সিরাতুল মোস্তাকিম : জান্নাতের রোডম্যাপ, নারী সমাজের উন্নয়ন-প্রেক্ষিত ইসলাম, সম্পাদনা করেন : ইদানীং লিটল ম্যাগ,রক্তে ভাসে ইরাক, ইসলামে হজ ও ওমরাহর বিধান, কাব্যগ্রন্থ: মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন, হৃদয় গোলাপের পাপড়িগুলো, যৌথ কাব্যগ্রন্থ: আমি মেঘ হবো, সপ্তর্ষি-১, সপ্তর্ষি-২ গø্যাডিওলাস, উপন্যাস : কর্ণফুলীর গাঙচিল, ছড়াগ্রন্থ: বাবার খুশী মায়ের হাসি ইত্যাদি।
অমর একুশে বইমেলার যুগ্ম সচিব জামাল উদ্দিন বলেন, বইপ্রেমীদের ঢল নেমেছে মেলায়। নির্ধারিত সময়ে মেলা প্রাঙ্গণ আনন্দময় ও প্রাণচঞ্চল থাকছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে বই বিক্রির সংখ্যা বাড়ছে। সবার প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে বইমেলা।
উল্লেখ্য, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ১৯ দিনব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করেছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে মেলা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১০টি প্রকাশকের স্টল রয়েছে।

অভিন্ন বইমেলার
সুফল মিলছে
কবি রাশেদ রউফ
নিজস্ব প্রতিবেদক


কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাশেদ রউফ বলেছেন, এবারের বইমেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি জানিয়ে দেয় আগামীতে চট্টগ্রামে আরো সমৃদ্ধ বইমেলা হবে।
শিশু সাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত এ কবি বলেন, এবার পাঠক, দর্শনার্থীদের ঢল দেখে আমরা বলতে পারি, অভিন্ন বইমেলা আয়োজনের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এর আগের সমস্ত বইমেলাকে ছাপিয়ে নতুন, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন বইমেলা কিভাবে করা যায় তার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলো। আমি একজন সাহিত্যকর্মী হিসেবে এ উদ্যোগ
অব্যাহত থাকার প্রত্যাশা করি।
রাশেদ রউফ বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এবার সিটি কর্পোরেশন অভিন্ন বইমেলার আয়োজন করেছে। এটা চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার ফসল। বহুদিন ধরে আমরা যারা চট্টগ্রামের সাহিত্যকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী, বইপ্রেমী নাগরিক আমাদের একটা দাবি ছিলো অভিন্ন বইমেলা আয়োজনের। ফেব্রুয়ারি মাসে ভিন্ন ভিন্নভাবে না করে অভিন্নভাবে বইমেলা করার। আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের এ উদ্যোগ রীতিমতো প্রশংসনীয়। মেয়রকে এজন্য অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, পাশাপাশি আমাদের ভাবতে হবে, চট্টগ্রামের বইমেলায় চট্টগ্রামের লেখকদের স্বার্থকে কিভাবে অগ্রাধিকার দেয়া যায় তা নিয়ে। যেমন বাংলা একাডেমির বইমেলায় শুধু বাংলাদেশের বই পাওয়া যায়। কলকাতা বা অন্য বিদেশি প্রকাশনার বইয়ের স্থান বাংলা একাডেমিতে নেই। কারণ বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পকে প্রতিষ্ঠিত করতে, সম্বৃদ্ধ করতে সরকারের এই উদ্যোগ। সে হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের কোনো একজন লেখকের বই মেলায় স্থান পেতে হলে বাংলাদেশি কোনো প্রকাশনা শিল্পের মাধ্যমে বাজারজাত করতে হয়। কলকাতার অনেক লেখকের বই বাংলাদেশের প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত হয়। এর কারণ বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পকে সমৃদ্ধ করা।
দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ বলেন, বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, অর্থনীতি সবকিছুর কেন্দ্র রাজধানী ঢাকা। ঢাকায় যারা থাকেন তারা ঢাকার বইমেলা থেকে সমস্ত সযোগ-সুবিধাগুলো পান। চট্টগ্রামের বইমেলায় কিভাবে চট্টগ্রামের প্রকাশকদের অগ্রাধিকার দেওয়া যায়, টিকিয়ে রাখা যায়, ভর্তুকি দেওয়া যায় সেটা চিন্তা করা উচিত। কারণ এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের চট্টগ্রামের বইপ্রেমী মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
কবি রাশেদ রউফ এবার বইমেলায় দশটি বই নিয়ে এসেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘রাশেদ রউফ শ্রেষ্ঠ কিশোর কবিতা’, ‘ছুটি মাখা সকালে’, ‘যখন আমি ছোট ছিলাম’, প্রবন্ধের মধ্যে ‘শিশু সাহিত্য ও আমাদের দায়বদ্ধতা’ ও ‘বাংলা ছন্দের সহজ পাঠ’, কিশোর গল্পের মধ্যে ‘বাবা আমি তোমাকে ভালোবাসি’, ‘বাবারা কি মায়ের মত হয়’, ‘বীরের স্বপ্ন’ এবং জীবনী ‘বিজ্ঞানী ড. খুদরত-ই-খুদা’।
নিজের লেখা বইগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, এবার আমার দশটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে কিশোর কবিতা তিনটি, প্রবন্ধ দুটি, জীবনী একটি এবং তিনটি কিশোর গল্প রয়েছে।