নতুন মাদক ‘এস্কাফ’ কঠোর হস্তে মাদক ব্যবসায়ীদের দমন করা জরুরি

24

 

দীর্ঘদিন হতে আমাদের দেশে অবৈধ মাদক চোরাকারবারীর দৌরাত্ম্য চলছে। নব্বই শতাংশেরও অধিক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এদেশে মানুষ যেভাবে মাদক আসক্ত হচ্ছে তা ভয়াবহ রূপ নিতে চলেছে। বিদেশিদের জন্য সরকার সীমিতভাবে মাদকের লাইসেন্স দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে দেশের মানুষের আপত্তি নেই। আপত্তি হলো ফেন্সিডিল, ইয়াবা, চোলাই মদ ইত্যাদির ব্যাপক অবৈধ বাজারজাত রয়েছে দেশে। যার কারণে দেশের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে কিশোর অপরাধ। ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে এক সময় দেশে ফেন্সিডিল প্রবেশ করতো অবৈধ মাদক চোরাচালানীদের মাধ্যমে।
দেশের সরকার ভারতের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে একসময় ভারত থেকে অবৈধ মাদক ফেন্সিডিল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও মিয়ানমার সীমান্ত হতে অবৈধ প্রবেশ করা ইয়াবা দেশের মাদক রাজ্যে এখনো দাপটের সাথে দেশের মাদকসেবি ও যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সরকার ইয়াবা চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে ইয়াবার অবৈধ ব্যবসায়ীদের ক্রয়ফায়ারে হত্যার পরও দেশ হতে ইয়াবার অবৈধ চালান বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এখনো ইয়াবার দাপট দেশে বিদ্যমান। এর মূল কারণ হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য এবং আমাদের সাথে মিয়ানমার সরকারের সম্পর্কের অবনতি। মিয়ানমার সরকারের সাথে সম্পর্ক ভালো হলে টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় ইয়াবার কারখানা সেদেশের সরকারের মাধ্যমে বন্ধ করা সম্ভব হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, রাজনৈতিক কারণে মিয়ানমারে উৎপাদিত ইয়াবার মতো মারাত্মক মাদক এদেশে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। যা আমাদের যুব ও ছাত্র সমাজকে পর্যন্ত ধ্বংস করে দিচ্ছে।
একদিকে ইয়াবা, অন্যদিকে দেশের পার্বত্য এলাকায় তৈরি বাংলা মদ এদেশের একটা শ্রেণিকে ধ্বংস করছে। এমতাবস্থায় ‘এস্কাফ’ সিরাপ নামে ভারতে তৈরি মাদক, ভারত সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। যা আমাদের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা কি করে তা আমরা জানি না। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অবৈধ মাদক প্রবেশ কেন বন্ধ হয় না তা আমাদের বুঝে আসে না। দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। সীমান্তে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি রয়েছে। কিন্তু তাদের অসতর্কতা এবং অসাধু প্রবণতাই এর জন্য দায়ী। আমরা জানি এক সময় ভারতে উৎপাদিত ফেন্সিডিলের চালান ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। কিন্তু দু’দেশের সমঝোতার উপর ভিত্তি করে তা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন মাদক ‘এস্কাফ’ সিরাপ ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশে।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে ‘এস্কাফ’র প্রথম চালানের কথা আমরা দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন হতে বিস্তারিত জেনেছি। র‌্যাব-৭ এ অবৈধ এস্কাফ, ফেন্সিডিল, বাংলা মদ তথা চোলাই মদ, ইয়াবাসহ সব ধরনের অবৈধ মাদক দেশে প্রবেশ ও তার ব্যবহার বন্ধে এদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবিই যথেষ্ট। তারা দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করলে অবৈধ মাদক ব্যবসা ও মাদকসেবির সংখ্যা কমতে বাধ্য। আমার সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে দেশে নতুন মাদক এস্কাফসহ সব ধরনের অবৈধ মাদক দ্রব্যের দেশে অবৈধ প্রবেশ বন্ধে কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা আশা করি।