নতুন বাড়ি-জমি পেয়ে আনন্দের বন্যা

38

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখে হাসিনার উদ্যোগে ৭০ হাজার গৃহহীন-জমিহীন হতদরিদ্র পরিবারকে নতুন ঘর করে দেয়া হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রায় ৯ লাখ মানুষকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলছে। এ মাসে ৭০ হাজারের পাশাপাশি আগামি মাসে আরও ১ লাখ পরিবার বাড়ি পাবে। গতকাল শনিবার এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশের ৭০ প্রায় ৭০ হাজার পরিবার নতুন বাড়ি ও ২ শতাংশ করে জমির মালিকানা বুঝে পেয়েছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুজিব শতবর্ষ পালন করছে সরকার। বছরটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জাতির পিতার উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী দেশের ভূমি ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮২ হাজার ৩৩টি পরিবারকে ঘর ও জমি দেওয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। শনিবার উদ্বোধনের পর পর্যায়ক্রমে এ তালিকার সবাই এই সুবিধা পাবে।
উপকারভোগীদের মধ্যে যাদের জমি আছে, তারা শুধু ঘর পাবে। যাদের জমি নেই, তারা ২ শতাংশ জমি পাবে (বন্দোবস্ত)। দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি ঘর তৈরিতে খরচ হচ্ছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। সরকারের নির্ধারিত একই নকশায় হচ্ছে এসব ঘর।
রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেট থাকছে। টিউবওয়েল ও বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হচ্ছে। খাসজমিতে গুচ্ছ ভিত্তিতে এসব ঘর তৈরি হচ্ছে। কোথাও কোথাও এসব ঘরের নাম দেওয়া হচ্ছে ‘স্বপ্ননীড়’, কোথাও নামকরণ হচ্ছে ‘শতনীড়’, আবার কোথাও ‘মুজিব ভিলেজ’।
এই উদ্যোগের আয়োজন সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ :
ফটিকছড়ি :
মুজিববর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ৭০ পরিবারকে পাকা বাড়ি হস্তান্তর করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। শনিবার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংসদ তাদের কাছে বাড়িগুলোর কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ের এসব বাড়ি উপজেলার পাইন্দং, সুয়াবিল, কাঞ্চননগর ও ভূজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। এ উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশ উপজেলা কার্যালয়ের জহুরুল হক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারী সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব, নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন নাহার এবং ভাইস চেয়ারম্যান ছালামত উল্লাহ চৌধুরী।
চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৮০ হতদরিদ্র গৃহহীন পরিবার নতুন ঘর ও বুঝে জমি পেয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এই উপলক্ষে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের হলরুম মোহনা মিলয়নায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজের সভাপতিত্বে ঘর ও জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম। উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টু, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু প্রমুখ।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের ভূমিহীন ২০০ পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে জমি ও নতুন বাড়ি। তাদের মধ্যে ২০টি নৃ-তাত্বিক পরিবারও রয়েছেন।
পেকুয়া :
পেকুয়া উপজেলার ৯টি পরিবারকে জমি ও নতুন ঘর হস্তান্তর করে উপজেলা প্রশাসন। উপকারভোগীদের মাঝে এসব জমি ও ঘর হস্তান্তর করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোতাচ্ছেম বিল্যাহ প্রমুখ।
জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৪৫ ভূমিহীন পরিবারকে দেয়া হবে জায়গাসহ নতুন বাড়ি। প্রথম দফায় উপজেলার ক শ্রেণির ৯টি হতদরিদ্র গৃহহীন পরিবারকে জমি ও নতুন বাড়ি হস্তান্তর করা হয়।
লোহাগাড়া :
উপজেলার ৯ ইউনিয়নে জমিসহ নতুন ঘর পেয়েছে ১৮ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। গুচ্ছগ্রাম-২ (সিভিআরপি) প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় ১৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান হাবীব জিতু বলেন, ঘরগুলোর নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘর ও জমি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে স্বামী পরিত্যক্ত ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের।
উখিয়া :
কক্সবাজারের উখিয়ায় ৩৫ গৃহহীন পরিবার পেয়েছেন দুই শতাংশ জমি ও বসতঘর। শনিবার এই উপলক্ষে উপজেলা পরিষদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিবারগুলোর মাঝে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ৩৫ পরিবারকে বাড়ি-জমি হস্তান্তর করা হলেও উপজেলায় আরো ৬৫ পরিবার এই সহায়তা পাবে বলে জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহীন আকতা, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিমূল এহসান খান, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ, রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী৷ উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নেছা বেবী, রত্নাপালং ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী, জালিয়া পালং ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী, হলদিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সুবিধাভোগী পরিবারগুলোর সদস্যরা।