নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতিসহ ৬ জনের বিচার শুরুর আদেশ

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচলাইশ থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নারগিস আক্তার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আসামিরা হলেন, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ, নগর ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক আবু নাছের চৌধুরী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম,নগরের শুলকবহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম নাজমুল আহসান, যুবলীগ নামধারী ইমরান হোসেন ও ইদ্রিস মিয়া। অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় জামিনে থাকা উল্লেখিত ৬ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এই বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি মো. তসলিম উদ্দিন জানান, মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি চলাকালে জামিনে থাকা ছয় আসামি উপস্থিত ছিলেন। তারা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার এজাহার : ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রæয়ারি। দীর্ঘ ২৩ বছর (ঘটনার আগ পর্যন্ত) প্রবাসের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে জেলার সীতাকুন্ডের বাসিন্দা বন্ধন নাথের কেনা পাঁচলাইশ ষোলোশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় ৫৪ শতক জায়গায় বাড়ি করার জন্য আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডিজাইন সোর্স লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেন। ওই দিন কাজ শুরু করতে গেলে আসামিরা এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে বন্ধন নাথের পিঠে গুলি করা হয়। এমনকি তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দিলে আসামিদের দেওয়া স্ট্যাম্পে সই করেন তিনি। স্ট্যাম্পে প্রথম পক্ষ রাখা হয় বন্ধন নাথকে। দ্বিতীয় পক্ষ এ টি এম মঞ্জুরুল ইসলামকে। সেখানে ব্যবসায়িক লেনদেন বাবদ বন্ধন নাথের কাছে আসামিরা পাওনা রয়েছেন দেখানো হয়। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড লালদীঘির পূর্ব পাড় শাখার হিসাব নম্বর থেকে পাঁচটি চেক প্রদান করেন বাদী। ৭০ লাখ টাকা পেয়েও থেমে থাকেননি আসামিরা। ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজ করতে গেলে আসামিরা বাকি ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। শেষে বাধ্য হয়ে এই ঘটনায় প্রবাসী বন্ধন নাথ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ দেবাশীষ নাথ ও এটিএম মঞ্জুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের আদেশে তাদের কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেখানে ব্যবসায়িক লেনদেনের তথ্য দেখাতে পারেননি আসামিরা। তদন্ত শেষে পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে এই মামলার অভিযোগপত্র দেন।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল : আসামিদের হুমকি ও চাপে পড়ে ৭০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন বন্ধন। বাকি ৩০ লাখ টাকা না দেওয়ায় আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্মাণকাজ। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রেও এসব তথ্য উঠে আসে। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। দন্ডবিধি আইনের ৪৩/৩৪২/৩২৩/৩০৭/৪৪৭/৩৮৪/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬(২) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় এতে।