নগরীর ফুসফুসখ্যাত সিআরবিকে বাঁচান

9

 

চট্টগ্রামের ফুসফুস হিসেবে বিবেচিত সিআরবি এলাকা শুধুমাত্র বেড়ানো এবং মুক্ত বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণের জন্য আদর্শ স্থানই নয় বরং এই স্থানকে ঘিরে রয়েছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক বলয়। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের প্রধান বর্ষবরণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এই সিআরবিতে। বলীখেলা, বসন্ত উৎসবসহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজন প্রায় সারাবছরই থাকে সিআরবি পাহাড়ে। আশপাশে আবাসিক এলাকা না থাকায় অনুষ্ঠানের কারণে পরিবেশ কোলাহলপূর্ণ হলেও কোনো ধরনের অনুযোগ আসে না কোনো মহল থেকে। অনুষ্ঠান ছাড়াও প্রতিদিন এখানে ছুটে আসে হাজারও মানুষ। অন্য জেলা থেকে যারা বেড়াতে আসেন তাদের পছন্দের তালিকায়ও রয়েছে এই সিআরবি। মহানগরীর ডিসি হিল আরেকটি দৃষ্টিনন্দন স্থান হলেও চারপাশে ঘনবসতি। ফলে মাইকের শব্দে অনেকেরই আপত্তি। কিন্তু সিআরবি এলাকায় তা নেই। চট্টগ্রাম শহরের কোথাও কোনো ফাঁকা জায়গা দেখলেই কোনো না কোনো কর্তৃপক্ষের (সিটি করপোরেশন, সিডিএ, জেলা প্রশাসন, রেলওয়ে, সেনাবাহিনী) তৎপরতা শুরু হয়ে যায় সেটিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার উপায় সন্ধানে। এভাবে চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামের মাঠটিকে সুইমিংপুল নির্মাণের নামে সংকোচিত করা হয়েছে।বর্তমানে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের জনগণ হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিবাদে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে এবং প্রতিদিন করে যাচ্ছে। এ সময় ‘গাছ কেটে হাসপাতাল নয়’, ‘সেইভ সিআরবি’, ‘নিঃশ্বাস আমার অধিকার’ এমন নানা স্লোগানে মুখর সিআরবি এলাকা। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ না হওয়ার দাবিতে ধীরে ধীরে গণআন্দোলনে রূপ নিচ্ছে। কর্তৃপক্ষ যত তাড়াতাড়ি এটা অনুধাবন করতে পারে তা সকলের জন্য মঙ্গল। দেশে করোনার এই খারাপ সময়েও মানুষের স্বতস্ফুর্ত সাড়া সিআরবির প্রতি কী পরিমাণ ভালোবাসা থাকলে তা হয়, কর্তৃপক্ষকে সেটা বুঝতে হবে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ নামে করপোরেট সিন্ডিকেটের পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ডেকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। এ রকম কর্মকান্ডের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের জবাবদিহিতায় আনা হোক- এটি নগরবাসীর প্রত্যাশা।