নগরীর নতুন মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে আটকা

97

নগরীর নতুন মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না এখনও। গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা বলেছিলেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু এটি চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনও সাড়া মিলেনি।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রকল্পের ফাইল বর্তমানে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়েই রয়েছে। এ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর আবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরে যাবে ফাইল। সেখানে অনুমোদনের পর শুরু হবে নগরীর মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ। যেটি প্রণয়নের দায়িত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ইতোমধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এ প্রকল্প গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবু ঈছা আনছারী।
সিডিএ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, মহাপরিকল্পনার মেয়াদ ২০১৫ সালে শেষ হয়। তবে সিডিএ অন্তবর্তীকালীন সময়ে ২০০৮ সালে নগরীর বিশদ পরিকল্পনা ড্যাপ (ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান) প্রণয়ন করে। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে মাস্টারপ্ল্যানের কার্যকারিতা না থাকলেও ড্যাপ দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে জানালেন মাস্টারপ্ল্যান সংক্রান্ত প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবু ঈছা আনছারী। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দুই বছর সময় লাগবে।
অত্যাধুনিক ও সুশৃংখল চট্টগ্রাম নগরীর জন্য ২১ বছরের নতুন মহাপরিকল্পনা তৈরির প্রকল্পটির কাজ আটকে আছে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়। এই মহাপরিকল্পনার আওতায় পুরো নগরীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিশদ সার্ভে হবে। ওই সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী তৈরি হবে ২০২০ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ২১ বছরের চট্টগ্রাম শহরের মহাপরিকল্পনা। এটি হচ্ছে সিডিএ’র তৃতীয় মহাপরিকল্পনা। এরই মধ্যে সার্ভে এবং পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সিডিএ পর্যায়ে কনসাল্টেন্ট নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। দরপত্রে এ কাজে ১১টি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করলেও তাদের মধ্য থেকে বাছাই করা হয়েছে ৫টি প্রতিষ্ঠানকে। দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দুই বছরব্যাপী এ প্রকল্পের কাজের জন্য ব্যয় হবে ৩৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। সার্ভে কাজে ব্যবহার করা হবে আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল (ইউএভি), লাইডার (সর্বাধুনিক ড্রোন), টেরিস্ট্রারিয়াল লেজার স্ক্যানার (টি এল এস), স্টেরিও স্যাটেলাইট ইমেজসহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এই ধরনের প্রযুক্তি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ব্যবহার করা হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক এবং সিডিএ’র নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আবু ঈসা আনছারী।
উল্লেখ্য, এ মহাপরিকল্পনার প্যাকেজে সর্বমোট ৬টি কম্পোনেন্ট থাকছে। থাকবে বন্যা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ সিস্টেম। থাকবে দীর্ঘমেয়াদী ট্রাফিক ও যানবাহন চলাচলের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থাও। বৈশ্বিক জলবায়ু বিবেচনা করে শহরকে দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ রাখতে থাকবে সাসটেইনেবল এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা। মাস্টারপ্ল্যানের এ প্রকল্পে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষে ৪১টি ওয়ার্ডে স্থানীয়দের নিয়ে ৪১টি কমিটি গঠন করা হবে। এছাড়াও শহরের সাথে লাগোয়া উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ও স্থানীয়দের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া হবে এবং তাদের চাহিদা ও প্রয়োজন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মহাপরিকল্পনা প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পিইসি সভায় কিছু বিষয় সংশোধন সাপেক্ষে অনুমোদন লাভ করে।