নগরীর চাক্তাই ভেড়া মার্কেট বস্তি অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন করা হোক

69

দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি কর্ণফুলী নদীর তীরে চাক্তাই বেড়া মার্কেট বস্তির দুইশতাধিক টিনের ঘর পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি এ অগ্নিকান্ডে ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ অগ্নিকান্ড খুবই বেদনাবিধূর। স্থানীয় পত্রিকান্তরে এ অগ্নিকান্ডকে রহস্যজনক আখ্যায়িত করেছে, যাই হোক বিষয়টি খুবই বিয়োগান্তক। অগ্নিকান্ডে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির বেশ ক’টি কারণ আমরা পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জেনেছি। প্রথমত এ বস্তিতে নেশাখোরদের উৎপাত থাকায় যে সব স্বল্প আয়ের মানুষ বসবাস করতো তারা ঘরে তালা লাগিয়ে ঘুমাতো। আগুন ছড়িয়ে পড়লে ঘর থেকে তালা খুলে দ্রুত বের হতে না পারা প্রাণনাশের একটি বড় কারণ। দ্বিতীয়ত ফায়ার সার্ভিস পৌঁছতে দেরি হওয়া। তৃতীয়ত পরিকল্পিত অগ্নিকান্ড বলে মনে করছে অনেকেই। উল্লেখ্য কারণে বেড়ার টিনের ঘর দ্রুত জ্বলে ভস্ম হয়ে যায়। সাধারণত এসব বস্তিতে স্বল্প আয়ের খেটে যাওয়া মানুষই বসবাস করে থাকে। স্বাভাবিকভাবে এসব বস্তি এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বেশি থাকে। ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’ এমন প্রবাদ অনেকটা এসব বস্তিতে দেখা যায়। তাই বলে বস্তিবাসী সবাই অপরাধ প্রবণ এমন বলা যায় না। কেননা অভাবের তাড়নায় অনেক ভালো মানুষ স্বল্প ভাড়ার বাসায় দিনাতিপাত করতে দেখা যায়। যে যাই বলুক দুই শতাধিক বস্তিঘর পুড়ে হাজারো মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসক এ অগ্নিকান্ড তদন্তে কমিটি গ্রহণ করে অগ্নিকান্ডের কারণ অনুসন্ধানের ব্যবস্থা করছে। বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষ। জরুরি ভিত্তিতে উক্ত অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন জরুরি। এ বস্তির অসহায় মানুষগুলো যারা প্রাণে বেঁচে আছে তারা এক কাপড়ে প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছে মাত্র। সংসারের আসবাবপত্র বলতে কিছুই নেই সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় মানবিক কারণে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সাহায্যের ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসনসহ বিত্তশালীদের এগিয়ে আসতে হবে। পত্রিকার খবরে প্রকাশ দু’টি তদন্ত কমিটি কারণ অনুসন্ধান করছে। তদন্তে এ অগ্নিকান্ড নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা চায় সাধারণ মানুষ। সরকারি উদ্যোগে উল্লেখ্য অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ২২০ টিনের ঘরের বাসিন্দাদের মানবিক সাহায্য করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক। অবৈধ মালিকানায় যে সকল বস্তিঘর কর্ণফুলীর তীরে রয়েছে সেগুলো উচ্ছেদের পক্ষেই আমাদের মতামত। তবে তাদের উচ্ছেদের পূর্বে যথাযথ নোটিশ প্রদান এবং সতর্ক করা জরুরি। চট্টগ্রাম শহরে দরিদ্র সাধারণ মানুষের বসবাসের তেমন সরকারি আবাসনের ব্যবস্থা নেই। স্বল্প আয়ের দীনমজুর নাগরিকদের বসবাসের জন্য সরকারি গৃহায়ন কর্মসূচির আওতায় পরিকল্পিতভাবে আবাসন করা হলে দরিদ্র নিস্ব এবং স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সমস্যা কমে আসবে। আর অবৈধ স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস এড়াতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থসহ একই শ্রেণির মানুষের সমস্যা সমাধানে সরকার এগিয়ে আসবে এমন মন্তব্য বিবেকবান মানুষের।