নগরীর কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে উপচেপড়া ভিড়

25

ফারুক আবদুল্লাহ

টিকা মজুদ তুলনামূলক কম থাকায় আজ থেকে মডার্নার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেল। এই টিকার মজুদ থাকা সাপেক্ষে একইদিন থেকেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে। আর এখন চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের প্রথম ডোজ দিয়েই টিকা কার্যক্রম চলবে। এছাড়া নগরীতে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান চালু থাকবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) এর পর দেশে মডার্না টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে। তবে যেসব স্থানে ওই টিকার প্রথম ডোজ উদ্বৃত্ত রয়েছে সেখানে দ্রুত প্রথম ডোজ দেওয়া শেষ করে দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এছাড়া ১৪ আগস্ট থেকে সারাদেশে আবশ্যিকভাবে সিনোফার্মের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে হবে। শিগগিরই দেশের টিকা কেন্দ্রগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পাঠানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, দেশে টিকার মজুদ তুলনামূলক কম থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার টিকার প্রথম ডোজ প্রয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, এখন প্রথম ডোজ চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের টিকা দিয়েই চালিয়ে নেওয়া হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে সিনোফার্মের ৬০ হাজার টিকা মজুদ আছে। এসব টিকা দিয়ে আগামী এক সপ্তাহ টিকাদান কার্যক্রম চালানো যাবে। আর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মডার্নার টিকা মজুদ আছে প্রায় ২০ হাজার। তবে মডার্নার টিকা পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় বৃহস্পতিবার থেকে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার জন্য নিবন্ধন করে ১ লাখ ৫ হাজার ৪২৫ জন প্রথম ডোজ নিয়ে যারা দ্বিতীয় ডোজ দিতে পানেনি তাদের জন্য গত ৬ আগস্ট ১ লাখ ৮ হাজার ডোজ টিকা আসে। গত রবিবার (৮ আগস্ট) থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। মাসব্যাপী এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে। বর্তমানে এ টিকার কোন ঘাটতি নেই। সবাইবে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে। একইভাবে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে টিকা নিতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেন ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৭৫৪ জন। এরমধ্যে উপজেলার ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৭৩৪ জন আর নগরীর ১০ লাখ ৫০ হাজার ২০ জন। এদের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। বাকি ১০ লাখ নিবন্ধনকারী এখনো টিকা নিতে পারেনি।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, কর্পোরেশন এলাকার ১১ কেন্দ্রে মডার্নার ২০ হাজার ডোজ টিকার মজুদ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। বেশকিছু কেন্দ্রে কিছু মজুদ থাকলেও তা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে। আগামী শনিবার কিংবা রবিবারের দিকে টিকা আসলে দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে মডার্নার প্রথম ডোজ টিকাদান কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণায় নগরীর কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে আসা মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং সিটি কর্পোরেশেন জেনারেল হাপসাতালে। এছাড়া অন্য কেন্দ্রেগুলোতেও তুলনামূলক ভিড় ছিল। এসব কেন্দ্রে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে অপেক্ষা করছেন। অনেক কেন্দ্রে দুপুর ১টার আগে টিকা ফুরিয়ে গেছে। এতে ভোগান্তি শেষে অনেককেই টিকা না নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। একইভাবে মডার্নার টিকা বন্ধ হওয়ার ঘোষণায় সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অবস্থান নেয় প্রবাসীরা।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে প্রবাসীদের টিকা নিশ্চিতে আশ্বাস দেওয়া হলে তারা ফিরে যায়।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে নগরীতে মডার্নার প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে। তবে নগরীতে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার ২য় ডোজের টিকাদান চালু থাকবে। টিকা আসলে আগামী শনি/রবিবার থেকে নগরীতে মডার্না টিকার ২য় ডোজ প্রদান শুরু হবে। নগরীতে প্রথম ডোজের টিকা প্রত্যাশীদের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, নগরীতে মডার্না টিকার প্রথম ডোজ প্রত্যাশীদের সিনোফার্মের টিকা দেওয়ার কোনো নির্দেশনা আসেনি এখনও।