ধ্বংস হচ্ছে ২২০ কন্টেইনারে থাকা পণ্যের চালান

15

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দর ও বেসরকারি ডিপোগুলোতে পড়ে থাকা ২২০ কন্টেইনার পঁচনশীল পণ্যের চালান ধ্বংসের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আজ বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় নগরীর মধ্যম হালিশহর আনন্দবাজার বেড়িবাঁধ এলাকা, পতেঙ্গা বে-টার্মিনাল সম্মুখে এসব পণ্য ধ্বংস কার্যক্রম শুরু হবে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি কন্টেইনারে থাকা পণ্য ধ্বংস করা হবে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো কন্টেইনারে থাকা পণ্য পরিবেশ সম্মত উপায়ে ধ্বংস কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নিয়ম অনুযায়ী, বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্য ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না করলে আমদানিকারককে নোটিশ পাঠায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নোটিশ দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ওই পণ্য খালাস না করলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস। এরপর নিলাম আহবান করে দরপত্র বিক্রি করে কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময় শেষে সব দরপত্র যাচাই-বাছাই করে সর্বোচ্চ দর দাতাকে পণ্য বুঝে নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে। এছাড়া নিলামে যেসব পণ্য বিক্রি হয় না দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায় সেগুলো ধ্বংস করা হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য মতে, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিভিন্ন বেসরকারি ডিপোতে পড়ে থাকা ২৬ লটে ২২০টি কন্টেইনারে পঁচনশীল পণ্য রয়েছে। এরমধ্যে বন্দরের রেফার্ড ও ড্রাই কন্টেইনার রয়েছে ২২টি ও বিভিন্ন বেসরকারি ডিপোতে রয়েছে ১৯৮টি কন্টেইনার। এসব কন্টেইনারে ধ্বংসযোগ্য বা পঁচনশীল পণ্যচালানসমূহ হলো- আদা, ফল, সরিষা বীজ, মাছের খাদ্য, মাছ ও মাংস। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক জারিকৃত স্থায়ী আদেশ বলে গঠিত ধ্বংস কমিটির গত ৪ জানুয়ারির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ সকাল ১১টায় এসব কন্টেইনারে থাকা পঁচনশীল পণ্যচালানের ধ্বংস কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি কন্টেইনারে থাকা পণ্য ধ্বংস করা হবে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো কন্টেইনারে থাকা পণ্য পরিবেশ সম্মত উপায়ে ধ্বংস কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনার কথা এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মুহাম্মদ মাহফুজ আলম জানান, বুধবার (আজ) সকাল ১১টায় পঁচনশীল পণ্যচালানের ধ্বংস কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। মোট ২২০টি কন্টেইনারে থাকা ধ্বংসযোগ্য পণ্যচালানের মধ্যে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি কন্টেইনারে পণ্যগুলো ধ্বংস করা হবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আমদানিকারকরা কাস্টমস নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধ না করে নিলামের মাধ্যমে পণ্য খালাস করতে চায়, যা সময়সাপেক্ষ। এ কারণে পণ্যভর্তি কন্টেইনার ইয়ার্ডে দীর্ঘদিন পড়ে থাকে। আবার বন্ড সুবিধার আড়ালে কিছু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় মালামাল নিয়ে আসে। কাস্টমস খবর পেয়ে মালামাল কায়িক পরীক্ষা করে শুল্কসহ জরিমানা আরোপ করলে আমদানিকারক ওই মালামাল নিতে চায় না। এছাড়া এইচএস কোড জটিলতার কারণেও দীর্ঘদিন পণ্য আটকে থাকে। আটকে থাকা পণ্যগুলো প্রতিমাসে নিলামে তোলার বিধান রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষ ইয়ার্ডে কন্টেইনার জট কমাতে প্রতিমাসে নিলামের আয়োজন করে থাকে।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি ইস্যুকৃত একটি চিঠিতে চট্টগ্রাম বন্দর ও বেসরকারি ডিপোগুলোতে পড়ে থাকা পাঁচ ধরনের পণ্য ধ্বংসের সিদ্ধান্তে কথা জানায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ২৬টি বিএল নম্বরভুক্ত পণ্যচালান ধ্বংস তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে কাস্টমস। বিএলভুক্ত পণ্যচালানগুলোর বিপরীতে আমদানিকারকের কোনো মামলা, আপত্তি বা নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে সাতদিনের মধ্যে জানাতে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।