ধস নামবে জ্বালানির চাহিদায় : আইইএ

22

করোনা মহামারিজনিত পরিস্থিতিতে বিশ্বের জ্বালানি চাহিদায় এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় ধস নামার আভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। বিশ্বে আর্থিক মন্দার সময়ের তুলনায় ৭ গুণ বেশি পতন হবে এ চাহিদার। এ ফাঁকে চাহিদা বাড়বে নবায়নযোগ্য জ্বালানির। আর তা ২০২০ সালে বিশ্বে রেকর্ড পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে আইইএ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বিশ্বের জ্বালানি খাতে করোনা ভাইরাসজনিত মহামারির প্রভাব নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইইএ। প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউন জারি থাকায় এ বছর জ্বালানি চাহিদায় বড় ধরনের পতন হবে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ। একদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা ধীরে ধীরে বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদায় পতন ঘটবে। এর মানে হলো এ বছর বিশ্বের জ্বালানি ব্যবস্থায় ক্লিন ইলেক্ট্রিসিটি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
করোনা মোকাবিলা করতে অনেক দেশে ভ্রমণ ও বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে গত ২৫ বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক তেলের চাহিদায় সবচেয়ে বড় ধরনের পতন ঘটবে বলে আভাস দিয়েছে আইইএ। একইরকমভাবে গ্যাসের চাহিদা কমবে ৫ শতাংশ। কয়লার চাহিদা ২০১৯ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ কমবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে কয়লার চাহিদায় এটিই হবে সবচেয়ে বড় পতন। এদিকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার বেড়েছে ৩ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)-এর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল বলেন, ‘প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানিরই বিশেষ করে কয়লা, তেল ও গ্যাসের চাহিদা কমছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারের জন্য শুধু নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে। বিশ্বমন্দার সময়ও এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়নি।’
বিরল জানান, এ বছর নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা ৫ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা বাড়তে দেখে জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের দিকে বেশি মনযোগী হতে পারে। আর এর মধ দিয়ে বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের হার কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিরল মনে করেন, বিভিন্ন দেশের সরকারের উচিত নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা।
বিরল বলেন, ‘যে হারে মানুষ মারা যাচ্ছে এবং বিশ্ব যে অর্থনৈতিক ট্রমার মধ্যে আছে, তা বিবেচনায় নিলে কার্বন নিঃসরণের এ ঐতিহাসিক কমতি নিয়ে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানির অবকাঠামো তৈরির কাজ ব্যাহত না করতে বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তিনি।