‘ধর্ষণের ঘটনার থেকে বাঁচতে অপহণ করে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে!’

42

‘বাড়ি ফেরার পথে সাতঘরপাড়া এলাকায় ধর্ষণ মামলার আসামির চাচা ছাত্রদল সভাপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ২ থেকে ৩ জন আমার বোনকে অপহরণ করে। এরপর আমার বোনকে তাদের জিম্মিদশায় রেখে সংবাদ সম্মেলন করে। ওই সময় আমার বোনকে যা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে সে তাই বলেছে। আমার বোন অপ্রাপ্তবয়স্ক। আমি তাকে উদ্ধারে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।’
গতকাল বুধবার রাতে পেকুয়া রিপোর্টাস ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন মগনামায় ধর্ষণের শিকার হওয়া এক স্কুলছাত্রীর বড় বোন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত ১৮ এপ্রিল ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে ধর্ষণ মামলার আসামি নুর আবিদ হোসেন আমাদের বাড়িতে যায়। ওই সময় আবিদ আমার বোনকে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে বিয়ে করা না করা নিয়ে আবিদ ও আমার বোনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে আমার বোন চিৎকার দেয়। তখন স্থানীয় লোকজন গিয়ে আবিদকে আটক করে। ওই সময় থেকে ১৮ এপ্রিল রাত আটটা পর্যন্ত বিয়ে নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও আমার নিকট আত্মীয়রা ছেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। আমার বাবা মারা গেছেন এবং আমার মা চট্টগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় ছেলে পক্ষ বিয়েতে রাজি হননি। পরবর্তীতে আমার বোন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ পৌঁছে আমার বোনকে উদ্ধার ও আবিদকে আটক করে। থানায় নেওয়ার পর আমি যখন বাদি হতে চাই তখন মগনামা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও ধর্ষকের চাচা জিয়াউর রহমান আমাকে মুঠোফোনে হুমকি দেয়। শুধু আমি নই, আমাদের সমাজ সর্দার হাবিবকেও মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছেন তিনি।’
‘এ বিষয়ে মামলা না করার জন্য হুমকি দিয়ে জিয়াউর রহমান মুঠোফোনে আমাকে বলেন, কেউ বাদি হলে তাকে কেটে টুকরো টুকরো করবো। এই কথপোকথনের রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। এরপর ভয়ে আমি বাদি হতে না চাইলে আমার বোন নিজেই বাদি হয়। থানার কাজ শেষ হলে পরদিন সকালে আমার বোনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আমি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যায়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আদালত হয়ে আমরা সন্ধ্যায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই। পথিমধ্যে মগনামা সাতঘরপাড়া এলাকায় আমাদের বহনকারী অটোরিকশা থামিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ২ থেকে ৩ জন আমার বোনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর বড়বোন বলেন, আমার বোনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর হুমকি ধমকি দিয়ে ওই দিন রাতেই জোরপূর্বক সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে তারা। এই সংবাদ সম্মেলনে আসামি নুর হোসেন আবিদের অভিভাবকরা আমার বোনের দু’পাশে বসে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে তাকে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কিছু কথা বলানো হয়েছে। যা মোটেও সত্য নয়। মামলা রুজু হওয়ার সময় থানায় আমি উপস্থিত ছিলাম। আমার বোন স্বেচ্ছায় এজাহার দিয়েছে। সবকিছুর স্বাক্ষী আমি নিজে। আমার বোনকে অপহরণ করার পর তারা আমার বোনকে মেরে ফেলতে পারে বলে আমি সন্দেহ করছি। এজন্য আমি পুলিশ ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। এখন আমার বোন কেমন আছে? কোথায় আছে? আমি কিছুই জানি না। আমার বোন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, তাকে উদ্ধারে আপনারা সহযোগিতা করুন।’