ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

15

পূর্বদেশ অনলাইন
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনেকেই ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। এটা মোটেও সঠিক না।’ বুধবার (১৩ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত ৮টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা বলি ধর্ম যার যার, উৎসব সকলের। কাজেই উৎসব সকলে আমরা এক হয়ে পালন করবো। ’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি আমরা বাঙালি। আমাদের দেশে কিন্তু সকল ধর্মের মানুষ বাস করে। সেখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই আছে। ’
সকল জাতি-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি বিকশিত করতে সরকারি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই যে সকল ধর্ম-বর্ণ, বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, তাদের নিজস্ব যে সংস্কৃতি, অর্থাৎ শুধু ধর্মালম্বী না, আমাদের যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদেরও কিন্তু নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা আছে, সংস্কৃতি আছে। সেগুলো যাতে বিকশিত হয়। সেদিকে দৃষ্টি রেখে আমরা প্রত্যেকটি এলাকায় তাদের সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ করে দিয়েছি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবহমান কাল থেকে যা চলে আসছে তা যাতে বিকশিত হতে পারে, সেজন্য আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের ঐতিহ্য, এগুলো আমরা ভুলবো না। কিন্তু আমরা সামনের দিকেও এগিয়ে যাবো। আধুনিক যুগের যত সংস্কৃতি সেটাও আমরা রপ্ত করবো। ’ সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালি এক হয়ে আমরা এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। যেখানে সকলের একটা চমৎকার মিলন কেন্দ্র হয়। … আমাদের প্রবাসীরাও এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেন। ’ অতীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে বাধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ পালন করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ১৪০০ সাল বরণ করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনকি রমনা বটমূলে বোমা হামলা করেও মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, যাতে আমাদের এই সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ হয়ে যায়। ’ আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি-ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে চর্চা করতে পারে, বিকশিত করতে পারে এবং আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সম্মিলন ঘটিয়ে যেন আরও বেশি উৎকর্ষ সাধন করতে পারে সেদিকে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। সেটাই আমরা দিব। ’ দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, অর্থনৈতিক ভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা অবশ্যই ধরে রাখতে হবে। ’ সংস্কৃতি চর্চায় সহযোগিতা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রান্ত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।