দ্রুত হরিশপুর-রহমতপুর সংযোগ সেতু নির্মাণ বাস্তবায়ন চায় এলাকাবাসী

72

সন্দ্বীপ পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ড ও পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ড সংযোগ সেতু যা হরিশপুর-রহমতপুর সংযোগ সেতু নামে পরিচিত। এটি উত্তর সন্দ্বীপের কয়েকটি ইউনিয়নের জনগণের যাতায়তের জন্য একমাত্র সহজ ও প্রয়োজনীয় মাধ্যম। বিশেষ করে সন্তোষপুর, কালাপানিয়া, হরিশপুর ও পৌরসভার হাজারো লোকজন প্রতিনিয়ত এ রুটে চলাচল করে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ সেতুর সংযোগ সড়কটি ছিলো অত্যান্ত ব্যস্ততম সড়ক। কিন্তু ২০১৩ সালে সুইসগেইট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে স›দ্বীপ পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড প্রতিনিয়ত প্লাবিত হত। আর অত্যাধীক স্রোতের কারণে পৌরসভার খাল গুলো প্রসারিত হয়ে প্রায় সবকটি ব্রিজ ও কালভার্ট ভেঙে অকেজো হয়ে যায়। সেই সময়ে এ সেতুটিও ভেঙে পড়ে। আর তখন থেকে দুর্ভোগ নেমে আসে এ চারটি ইউনিয়নের লোকজনের মাঝে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানও। ব্যবসায়ী শামসুদ্দীন জানান, এ রুটে এখন রিক্সা ও অন্য যানবাহন না চলায় কৃষি পণ্য ও উৎপাদিত সব্জীর সঠিক দাম পাচ্ছেনা কৃষকরা। অন্য দিকে চট্টগ্রামের সব্জী আমদানীতে খরচ বেশী পড়ে বলে, সে সব পন্য ক্রেতারা কিনতে হয় বেশী দামে। এলাকার পল্লী চিকিৎসক রুবেল জানান, এ সেতু ভেঙে যাওয়ার ফলে মানুষ ৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে বাঘের হাট হয়ে খাদ্যগুদাম রোডের মাধ্যমে স›দ্বীপ টাউনে যাতায়াত করতে হয়। যার কারণে গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া এবং সময় লাগে প্রায় দ্বীগুন। এছাড়াও পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফয়সাল জানান, ৩-৪ টি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়ার কারণে ক্লাসে প্রতিনিয়ত উপস্থিত হতে পারেনা। অপরদিকে হাসপাতালেও জরুরী রোগী পরিবহনে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পৌর কমিশনার মাঈন উদ্দীন মহি জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর মানুষের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে ২-১ বার এবং অতি সম্প্রতি পৌরসভা অফিস কর্তৃক ও বিভিন্ন সময়ে এলাকার বিত্তবান লোকদের আর্থিক সহায়তায় বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে কোনমতে মানুষ চলাচলের সুবিধা করে দেয়া হয়েছিল। পূর্বে খাল বার বার প্রসারিত হওয়ার কারণে ব্রিজ নির্মাণ ছিলো অসম্ভব। কিন্তু পরবর্তীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর জোয়ার ঢুকা বন্ধ হওয়ার ফলে পলি জমে খাল গুলো আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসে। এবং বর্তমানে সন্দ্বীপের পশ্চিমাংশে বিশাল চর জাগার ফলে এ খালটিতে এখন ব্রিজ নির্মাণ অত্যান্ত সহজ ও দীর্ঘ স্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে পৌর মেয়র বরাবরে স্থানীয় লোকজন সেতুটি পুনঃনির্মানের আবেদন করলে তিনি বলেন, এতো বড় ব্রিজ করা পৌরসভার পক্ষে প্রায় অসম্ভব। কারন আমাদের প্রতি অর্থ বছরে বাজেট থাকে মাত্র ৪-৫ কোটি টাকা। কিন্তু ব্রীজটি নির্মাণ করতে লাগবে প্রায় এক কোটি টাকা। তাই এ ব্রিজটি করতে গেলে অন্য উন্নয়ন কাজে সমস্যা হবে। গত ৪ মাস পূর্বে সংসদ অধিবেশনে সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম-০৩) আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী বরাবর এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ব্রিজটি নির্মাণ করে দেওয়া হবে কিনা জিজ্ঞেস করলে মন্ত্রী বলেন, স›দ্বীপ এ ৫ বছরে আমরা অনেক উন্নয়ন করলেও কোন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। তাই প্রকল্প জমা দিলে অচিরেই সেটি করে দেওয়া হবে। মন্ত্রীর আশ্বাস বাণী ৪টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো মানুষের যাতায়তের পথ সুগম করে দিয়ে পুরনো সন্দ্বীপ টাউনের ঐতিহ্য ফিরে আসবে বলে সকলের অভিমত। এবং তাতে এ সড়কটি আবারও ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হবে, উন্নয়ন হবে কয়েকটি হাট বাজারের, উপকৃত হবে ব্যবসায়ী সহ সাধারন মানুষ। সন্দ্বীপের ব্যপক উন্নয়নের মাঝেও এ ব্রিজটি নির্মাণ হচ্ছে না। তাই দ্রুত ব্রিজটি পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করার জন্যে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতার কাছে অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।