দ্বিতীয় দফায় আরো ২৭৩ রোহিঙ্গার ঠাঁই হলো ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে

7

মাঈনুদ্দিন খালেদ, নাইক্ষ্যংছড়ি

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখা থেকে পালিয়ে আসা ২৭৩ জন রোহিঙ্গাকে ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ পরিবারের এই ২৭৩ রোহিঙ্গাদের তুমব্রæ গ্রামের অস্থায়ী আশ্রয় শিবির থেকে ট্রানজিট ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়।
গত ১৮ জানুয়ারি থেকে ১৭ দিন ধরে তুমব্রু গ্রামে অবস্থান করছিলো ২ হাজার ৯৭০ জন রোহিঙ্গা। যা থেকে প্রথম ধাপে গত রবিবার নেয়া হয় ৩৬ পরিবারের ১৮৪ জনকে।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার অফিসের বরাদ দিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে ৩ টার মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স থেকে ২৭৩ জন মিয়ানমার নাগরিককে (রোহিঙ্গা) ৩ ধাপে ভাড়া করা কয়েকটি বাসে করে ৫ কিলোমিটার দূরের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হয়। সেখানে নেয়ার আগে ও ক্যাম্পে প্রবেশ করানোর পরে তাদের অফিস থেকে দেয়া নিবন্ধন কার্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর তাদের আশ্রয় শিবিরে হস্তান্তর করা হয়। আর ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেয়ার সময় তদারকি করেন শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অফিসের অতিরিক্ত কমিশনার শামছুদৌজ্জা ও কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ৫ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) প্রীতম সাহা এবং স্থানীয় ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ।
তিনি জানান, বেলা সাড়ে ১১ টার পর ১৫ পরিবারের ৮৫ জন ৩টি বাসে করে ২ বারে ১৭০ জনকে এবং বিকেল সোয়া ৩ টায় বাকী ১০৩ জনকে ৫টি বাসে তুমব্রু থেকে ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হয়।
রবিবার ও সোমবার দু’দফায় তুমব্রু গ্রাম থেকে সরিয়ে নেয়া রোহিঙ্গাদের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবিরের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হচ্ছে। যেহেতু তারা নিবন্ধিত।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, দ্বিতীয় দফায় ৫৩ পরিবারের ২৭৩ রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়েছে। কাল (আজ) মঙ্গলবার ৫১ পরিবারের ২৭০ রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হবে। তুমব্রু গ্রামে কোনো রোহিঙ্গাকে রাখা হবে না। ক্রমান্বয়ে এখানকার সব রোহিঙ্গাকে তুমব্রু গ্রাম থেকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হবে।
উল্লেখ্য, তুমব্রু কোনার পাড়া জিরো লাইনে দুই রোহিঙ্গা সশস্ত্রগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে গত ১৮ জানুয়ারি বিকেলে তুমব্রু গ্রামে আশ্রয় নেন সোয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গা। যারা টানা ১৭ দিন এখানে অবস্থান করে। ১৮ দিনের মাথায় রবিবার বেলা সাড়ে ১১ থেকে তাদের ট্রানজিট ক্যাম্পে সরানো শুরু হয়। এ ট্রানজিট ক্যাম্পে সোমবার নেয়া হয় ২৭৩ জনকে।
সূত্র মতে, তুমব্রুতে এতোদিন ৫৫৮ পরিবারের ২৯৭০ জন রোহিঙ্গা অবস্থান করছিলো। যাদের মধ্যে ৩৭৭ রোহিঙ্গা পরিবারের ২ হাজার ৯৮ রোহিঙ্গা নিবন্ধিত। বাকী ১৭৯ পরিবারের ৮৭২ জন রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত। এদের মধ্যে কিছু অপরাধী ও রয়েছে। যাদের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।