দেশ ছাড়লেন মালির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট কেইতা

15

সামরিক শাসকদের কাছ থেকে ক্ষমতা বেসামরিক নেতৃত্বের কাছে হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা শুরুর দিনই দেশ ছেড়েছেন মালির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকর কেইতা। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তিনি রাজধানী বামাকো থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবু ধাবির উদ্দেশ্যে রওনা হন বলে তার সাবেক চিফ অব স্টাফ মামাদৌ কামারার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মালিতে অগাস্টের মাঝামাঝি এক সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান কেইতা। ক্ষমতা দখলকারী জান্তার হাতে বেশ কিছুদিন আটক ছিলেন তিনি। গত মাসের শেষ দিকে মুক্তি পাওয়ার ৬ দিন পর গত মঙ্গলবার বামাকোর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
কামারা জানিয়েছেন, চিকিৎসাজনিত কারণেই তিনি আবু ধাবির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। মালির ক্ষমতাসীন সরকারের অনুরোধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাঠানো ভাড়া করা বিমানে তিনি দেশ ছেড়েছেন।
“এটি চিকিৎসাজনিত একটি ভ্রমণ, এতে ১০ থেকে ১৫ দিনের মতো লাগবে,” বলেছেন কামারা। কেইতার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। মালির এ ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের ঘাড় থেকে ২০১৬ সালে একটি টিউমার অপসারণ করা হয়েছিল।
মালিতে সেনা অভ্যুত্থান প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেও একই ধরনের পরিস্থিতি উসকে দিতে পারে এবং বিস্তৃত সাহেল অঞ্চলের ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের লড়াইকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর নেতারা। এ শঙ্কায় অগাস্টে কেইতাকে ফের ক্ষমতায় বসানোর দাবি জানিয়েছিলেন তারা। কিন্তু পরে ওই অবস্থান থেকে সরে এসে এক বছরের মধ্যে দেশটিতে নির্বাচন দেওয়ার আহŸান জানিয়েছে। তবে মালির ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর ন্যাশনাল কমিটি ফর দ্য স্যালভেশন অব দ্য পিপল (সিএনএসপি) এখনও ওই সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রæতি দেয়নি।
রয়টার্স জানিয়েছে, বেসামরিক নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়সীমা এবং সেই পর্যন্ত কীভাবে দেশ পরিচালিত হবে সে বিষয়ে বামাকোতে শনিবার আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সামরিক বাহিনী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের কয়েকশ প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
আলোচনা এক ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই এম৫-আরএফপি জোটের সমর্থকদের প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়। ক্ষমতাসীন জান্তা অধিকাংশ ওয়ার্কিং গ্রুপ থেকে দেশটির প্রধান এই বিরোধী এই জোটকে বাইরে রেখেছে বলে অভিযোগ । অগাস্টের সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে কেইতার পদত্যাগের দাবিতে বিশাল বিশাল বিক্ষোভ করেছিল এম৫-আরএফপি জোট।
রয়টার্স জানিয়েছে, বামাকোর কনফারেন্স হলে জোটটির সমর্থকদের চিৎকার চেঁচামেচির কারণে মঞ্চে থাকা সঞ্চালককেও থেমে যেতে হয়, এতে আলোচনার ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত হয়। সঞ্চালক পরে এম৫-আরএফপি সব ওয়ার্কিং গ্রুপে থাকতে পারবে এমন ঘোষণা দেওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।