দেশে সাধারণ নাগরিকের কোনো অধিকার নেই

10

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আজ দেশের সাধারণ নাগরিকের কোনো অধিকার নেই, কোনো সম্মান নেই। সব অধিকার ভোগ করছে ক্ষমতাসীন এবং তাদের দোসররা। আওয়ামী লীগের সবাই দুর্নীতিবাজ নয়, বিএনপির মধ্যেও ভালো মানুষ আছে। আমরা দেশের সকল নীতিবান, ভালো মানুষ ও আদর্শ নাগরিকদের নিয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। সংঘাতের নোংরা রাজনীতির অবসান চাই। তাই আগামী নির্বাচন দলের জন্য নয়; সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর দেশের জন্য হোক। আমরা স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
গতকাল শুক্রবার দুপুর ২ টায় চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়ামে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বাংলাদেশের রক্তে কেনা স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে অনতিবিলম্বে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রশাসনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। ক্ষমতাসীনরা আগামিতেও জাতীয় সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করতে চায়। বর্তমান সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। জাতীয় সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না বরং আবারও ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো নির্বাচনের নামে প্রহসন হবে। আমরা বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের চলমান সঙ্কট দূর হবে।
দেশে সর্বস্তরের ওলামা-মাশায়েখ, অন্যান্য ভ্রাতৃপ্রতিম ইসলামী সংগঠন এবং সব মতের ইসলামপন্থির প্রতি বিশেষ আহŸান জানিয়ে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আসুন আমরা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি না করে ইসলামকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য একটি কার্যকর ও টেকসই ঐক্য গড়ে তুলি। আমরা যদি কার্যকর এবং ফলপ্রসূ ঐক্য গড়ে তুলতে পারি, তাহলে ঐক্যবদ্ধ ইসলামী শক্তিই হবে এ দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। আর আল্লাহ যদি আমাদের কবুল করেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে পারি, তাহলে দেশে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে। সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার সুরক্ষা হবে। দুর্নীতি উৎখাত করা হবে। প্রতিহিংসা ও জিঘাংসার পরিবর্তে সমঝোতা ও সহনশীলতার রাজনীতির বিকাশ ঘটবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ বিশ্বসম্প্রদায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা হবে। সুদ, ঘুষ ও অপচয় বন্ধ করা হবে। মাদক, চাঁদাবাজি উৎখাত করব। নারী নির্যাতন ও মানব পাচার প্রতিরোধ করব। দ্রব্যমূল্য মানুষের সামর্থ্যরে মধ্যে রাখতে সিন্ডিকেটবাজি বন্ধ করা হবে। সন্ত্রাস নির্মূল করা হবে। দলীয়করণ বন্ধ করা হবে। শিষ্টের লালন ও দুষ্টের দমন নীতি গ্রহণ করা হবে। সুষম অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমাব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করব। বেকারত্ব দূর করব এবং কৃষক-শ্রমিকসহ সব শ্রমজীবী ও পেশাজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।
দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন’র সভাপতিত্বে বিভাগীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহব্বায়ক মাওলানা খলিলুর রহমান, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন, কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, কেন্দ্রীয় সদস্য সেলিম মাহমুদ, যুব আন্দোলন সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল করীম আকরাম, নগর সহ-সভাপতি আবুল কাশেম মাতবর, নগর সেক্রেটারী আল মুহাম্মদ ইকবালসহ চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন জেলা নেতৃবৃন্দ।