দেশে শনাক্ত ২২৩১ রোগী বাড়ল ৫০%

8

 

নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় দেশে এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ২২শ ছাড়িয়ে গেছে, সেই সঙ্গে দৈনিক শনাক্তের হার ছাড়িয়ে গেছে সাড়ে ৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২ হাজার ২৩১ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।
গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সেদিন ২ হাজার ৩২৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। আর দুই হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ৯৩১ জনে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ১০৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা ভাইরাস।
গত এক দিনে দেশে মোট ২৬ হাজার ১৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যা আগের দিন ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছিল।
এর আগে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার এর চেয়ে বেশি ছিল। সেদিন প্রতি ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮ দশমিক ৬৫ জনের কোভিড পজিটিভ এসেছিল।
করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের সময় গতবছর জুলাই-আগস্ট সময়ে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ শতাংশও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর তা নামতে নামতে জুলাই মাসে ২ শতাংশের নিচে চলে আসে।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বিশ্বে শুরু হয় ওমিক্রনের ত্রাস। ৩ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশ এবং ৬ জানুয়ারি তা ৫ শতাংশ ছাড়ায়।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ২০৮ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫১ হাজার ১১৩ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৭১৩ জন, যা আগের দিন ১৪ হাজার ৬৯৩ জন ছিল।
গত এক সপ্তাহে দেশে মোট ৭ হাজার ২৩৪ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩ হাজার ২১৩ জন। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১২৫ দশমিক ১ শতাংশ।
আর গত সাত দিনে মারা গেছেন আরও ২৫ জন, আগের সপ্তাহে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৭ জন। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। এই ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনেরই কোনো না কোনো ধরণের দুরারোগ্য অসংক্রামক ব্যাধি বা কোমরবিডিটি ছিল। তাদের ৮০ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপে এবং ৮০ শতাংশ ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। যে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। তাদের বয়স ছিল ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। তাদের দু’জন ঢাকা বিভাগের একজন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১৯০৮ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৮৫ শতাংশের বেশি। দেশের ১৭টি জেলায় একদিনে কারও করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। খবর বিডিনিউজের
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনের ২৬ হাজার ১৪৩টি নমুনা মিলিয়ে এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯৭ হাজার ৯৩৮টি নমুনা। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। গত বছর ৩১ আগস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৪ লাখ ৮৯ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৩০ কোটি ৭২ লাখের বেশি রোগী।