দেশে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে

27

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে সবসময় প্রস্তুত থাকেন। বর্তমানে সরকারের তহবিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল জেলায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাঠানো হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার ত্রাণসামগ্রী দ্বিগুণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্তরা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগিতা পেয়েছে। কোনো মানুষ যাতে খাবার ও আশ্রয়ে কষ্ট না পায় সেদিকে কর্মকর্তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন সঠিকভাবে করতে পারলেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। বন্যাকবলিত এলাকায় নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা ত্রাণের উপর নির্ভরশীল হতে চাইনা। এদেশকে দুর্যোগ সহনীয় রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই। প্রত্যেকে আন্তরিকভাবে কাজ করলে এদেশ অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সার্কট হাউজে আয়োজিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ী দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোনো মানুষ বাস্তুচ্যূত হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকটি মানুষকে নিজ নিজ এলাকাতেই সরকারি ব্যয়ে ঘর করে দেওয়া হবে। তার আলোকে সরকারি কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত হারে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা নিশ্চিত ও শিক্ষা বিভাগকে জেলার ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর উপযোগী করতে হাইজিন ওয়াশ করার নির্দেশ দেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল ও পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ফয়েজ আহমদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, বিজিবি’র ডেপুটি রিজিয়ন কমান্ডার কর্নেল মতিউর রহমান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মশিউদৌলা রেজা, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু তৈয়ব, ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার, উপ-পরিচালক মো. রুহুল আমিন, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান, সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হৃষিকেশ শীল, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, সাংবাদিক আরিফুর রহমান সবুজ, কোতোয়ালী থানা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শরমিন আক্তার, বাঁশখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম, ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য,এবার চট্টগ্রাম জেলার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৯ শ মেট্রিক টন চাল, ৮ হাজার ৪ শ ৪০টি শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ করা হয়। নগদ অর্থ দেওয়া হয় ১৮ লক্ষ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত ও নির্মাণের জন্য ২’শ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণ মঞ্জুরি হিসেবে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
দুপুরে প্রতিমন্ত্রী সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার কয়েকটি স্থানের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ-খবর নেন। সাতকানিয়া উপজেলার জন্য ১শ ৫৫ মেট্রিক টন চাল, ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ২ হাজার ১শ ৪০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১শ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণের জন্য ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। লোহাগাড়া উপজেলার জন্য ২৭ মেট্রিক টন চাল ও ১ হাজার ২শ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।