দেশি মাছের বিলুপ্তি রোধ করতে হবে

31

গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের মাধ্যমে দেশি প্রজাতির মাছকে বিলুপ্তি থেকে রক্ষার আহব্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, তেমনি সমৃদ্ধ হয় জাতীয় অর্থনীতি।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার সকালে গণভবনের লেকে মাছ অবমুক্ত করে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০’ উদ্বোধন ঘোষণা করতে গিয়ে এই কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের
এ সময় তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার মৎস্য খাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে গত ১১ বছরে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাদু পানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২.৫৮ গ্রাম মাছ আমরা গ্রহণ করছি।”
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যেও মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার কর্মীরা যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে মাছের উৎপাদন, বিপণন এবং রপ্তনি অব্যাহত রেখেছেন, এজন্য প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ধন্যবাদ জানান। দেশের স্বার্থে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের জনগোষ্ঠীর শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ নয়, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বিদেশে মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। দেশে প্রায় পৌনে পাঁচশ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৫০ প্রজাতির বেশি স্বাদু পানির মাছ রয়েছে। এছাড়াও চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকসহ অসংখ্য মৎস্য সম্পদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করেছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
“জাতির পিতা পাট, চামড়া, চা-এর সাথে মাছকেও বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং মৎস্যসম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন,” বলেন শেখ হাসিনা।
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রধানমন্ত্রীকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে নেয়া নানা পদক্ষেপ ও অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, এই খাতে গত ১১ বছরে বাড়তি প্রায় ৬৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বেড়েছে চাষি ও মৎস্যজীবীদের আয়। মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে কার্যকর কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া অব্যাহত রয়েছে; ফল, ইলিশের উৎপাদন ২০০৯ সালের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।