‘দূষণে কর্ণফুলীর তীরে বিপন্নের মুখে ১৫% উদ্ভিদ’

7

পূর্বদেশ ডেস্ক

দূষণ ও দখলের কারণে হুমকির মুখে থাকা কর্ণফুলীর দুই তীরের ৫২৮টি প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ১৫ দশমিক ৩৪ শতাংশই বিপন্নের মুখে; বিরল ৮১টি প্রজাতির অনেকগুলোই চলমান পরিবেশগত বিপর্যয় বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে হারিয়ে যেতে পারে বলে এক গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
মোহনা থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীতে দূষণ সবচেয়ে বেশি এবং এই অংশের দুই তীরে উদ্ভিদের সংখ্যা কম। তবে সেতুর পর থেকে কাপ্তাই অংশে দূষণের পরিমাণ কম এবং উদ্ভিদও রয়েছে বেশি।
পরিবেশবাদী একটি সংগঠনের চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত দুই তীরে পরিচালিত গবেষণার তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে। কর্ণফুলী নদীর প্রাণ-প্রকৃতি, উদ্ভিদ বৈচিত্র্য ও দূষণের কারণ’ তুলে আনতে সম্প্রতি এ গবেষণা করা হয়। এতে নদী দূষণের কারণও চিহ্নিত করা হয়।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে গবেষণা দলের প্রধান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
এতে দেখা যায়, গবেষণাকালে নদীর দুইপাশে ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদের প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭৩টি গণভুক্ত এবং ১১৩টি পরিবারের অন্তর্গত। এর মধ্যে বড় গাছ ১৪৪ প্রজাতির, গুল্ম প্রজাতির ৬৯টি, লতা প্রজাতির ৫৮ ও বীরুৎ প্রজাতির রয়েছে ২৪৪টি। শনাক্ত প্রজাতির মধ্যে একটি নগ্নবীজি উদ্ভিদ, নয়টি মসগোত্রীয় এবং ২৭টি ফার্ন প্রজাতি রয়েছে। খবর বিডিনিউজ’র
গবেষণায় উঠে এসেছে, নদীর তীরে শনাক্ত উদ্ভিদের মধ্যে একবীজপত্রী ১১২টি প্রজাতি এবং দ্বিবীজপত্রী রয়েছে ৩৭৯টি প্রজাতি। দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের মধ্যে ফ্যাবেসি গোত্রভুক্ত গাছ বেশি, রয়েছে। একবীজপত্রীর মধ্যে পোয়েসি গোত্রের গাছ সবচেয়ে বেশি আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণায় শনাক্ত করা গাছের মধ্যে কালমেঘ, হিজল, বেগুনি হুরহুরিয়া ও হাড়গোজাসহ ৩৫৫টি ওষধি উদ্ভিদ রয়েছে।
গবেষণা দলের প্রধান ওমর ফারুক বলেন, মূলত কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে কী পরিমাণ উদ্ভিদ প্রজাতি আছে এবং নদীর দখল দূষণের কারণে কোন কোন প্রজাতি হুমকির মুখে পড়ছে তা শনাক্ত করতেই এ গবেষণা করা হয়।
মূলত মোহনা থেকে কাপ্তাই বাঁধের আগ পর্যন্ত নদীর দুই তীরে অবস্থানরত উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোকে এ গবেষণার আওতায় আনা হয়েছে। নদীর উভয় তীরে ১০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত উদ্ভিদগুলোকে গবেষণার আওতায় রাখা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের গবেষণায় সাগরের মোহনা থেকে কালুরঘাট অংশ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দূষণ-দখল পেয়েছি। যার কারণে এসব এলাকায় উদ্ভিদ প্রজতি অনেক কম। যেগুলো এখনো টিকে আছে দূষণ ও দখল বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যতে এসব প্রজতি হারিয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি।