দুর্নীতির ব্যয় মেটাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে : ফখরুল

12

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতির ব্যয় মেটাতে সরকার দফায় দফায় দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। গতকাল বুধবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ইউনিয়ন পর্য়ায়ের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভায় ১ মার্চ থেকে বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব এমন অভিযোগ করেন। খবর বিডিনিউজের
কয়েক মাসের মধ্যে তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মন্তব্য করে তার অভিযোগ, বিদ্যুৎখাতে যে দুর্নীতি করেছে- সেই দুর্নীতির জন্য যে পরিমাণ খরচ-ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই ব্যয় মেটানোর জন্য তাদের (সরকার) এখন জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে নিতে হবে। সেই কারণে তারা আজকে বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়াচ্ছে।
ফখরুল বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে অর্থনীতিতে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাতে করে আমাদের সমস্ত উৎপাদন বেড়ে যাচ্ছে।কল-কারখানার উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। মানুষের সহজ জীবনযাপনের খরচ বাড়ছে, জীবনের ওপর চাপ পড়ছে।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির বরিশাল বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভা হয়। লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান।
গত ২৩ ফেব্রæয়ারি রংপুর বিভাগের বিএনপির ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে ১০ দিনের এ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর খুলনা ও সিলেট বিভাগের দলীয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষ হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে চাল-ডাল-তেল-লবণ এর প্রতিটির মূল্য ভয়ানকভাবে বেড়ে গেছে। প্রায় তিনগুণ, চারগুণ, পাঁচগুণ থেকে এখন ৫৯ ভাগ বেড়েছে। অথচ দেখেন দেশের মানুষ যখন চালের জন্য টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইন দিচ্ছে, দাঁড়িয়ে থাকলে এক মাইল লম্বা লাইনে, মানুষ যখন খাদ্যের জন্য হাহাকার করছে, সারা দেশে মানুষের মধ্যে যখন অস্বস্তিকর হাহাকার পরিস্থিতি প্রায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেই সময়ে আমাদের অনির্বাচিত অবৈধ প্রধানমন্ত্রী তিনি রাষ্ট্রপতির দেশের বাড়ি হাওর এলাকায় গেছেন এবং সেখানে একটি উৎসব হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমাদের যে মানুষগুলো এখন খাদ্যের অভাবে ভুগছে, চাল পাচ্ছে না। সেই মানুষগুলোর সঙ্গে এটা একটা রসিকতা বা তামাশা করা হচ্ছে। এটা দেশের মানুষ কোনোদিন ক্ষমা করবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রাইমারি বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করার চার ঘণ্টার মধ্যে আবার সেই ফলাফল স্থগিত করা হল। অর্থাৎ গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাই শুধু নয়, এ প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলও সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারেনি। পুরোপুরি ব্যর্থ। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নির্যাতনে আজকে মেয়েরা পর্যন্ত নিরাপদ নয় এবং সেখানে কী ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছে যে, হাইকোর্ট বলেছে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলোতে একই অবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় গেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তার মধ্যে তাদের লুটপাট বন্ধ নেই। তারা রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি করে পাচার করে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো থেকে তারা টাকা পাচার করে বিদেশে বাড়ি তৈরি করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনকে আরও জোরদার করার আহবান জানান তিনি।