দুটি ফুটওভার ব্রিজ হচ্ছে লালখান বাজার মোড়ে

60

লালখান বাজার মোড়ে (ইস্পাহানি মোড়) দুটি আধুনিক ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অধীনে এ ফুটওভার ব্রিজ দুটি নির্মাণ করা হবে। দুটি ফুটওভার ব্রিজেই স্কেলেটরসহ আধুনিক সুবিধা থাকবে। স্কেলেটর ফুটওভার ব্রিজের মাধ্যমে লালখান বাজার মোড়ে পারাপার যেমন ঝুঁকিমুক্ত হবে তেমনি যানজটও নিরসন হবে।
লালখান বাজার মোড়ে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রতিদিন কয়েক হাজার পথচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করেন। ফলে প্রায়শই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। লালখান বাজারে ফুটওভার ব্রিজের দাবিতে সচেতনতামূলক সংগঠন নগর ও নাগরিক এর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদানসহ একাধিক কর্মসূচি পালন করেছিল। তাদের দাবির মুখে তৎকালীন মেয়র আজম নাছির উদ্দীন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
পথচারীদের সড়ক পারাপার ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ করতে ফুটওভার ব্রিজ অথবা আন্ডারপাস নির্মাণের দাবিতে দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছিল সামাজিক সংগঠন নগর ও নাগরিক। এতে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাক্ষর দিয়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের জন্য জোর দাবি করেছিলেন। জোরালো দাবি থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় ফুটওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাস নির্মাণ হয়নি মোড়টিতে। তবে এবার লালখানবাজার মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সিডিএ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অধীনে দুটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ হবে লালখান বাজার মোড়ে।
এ বিষয়ে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, লালখান বাজার মোড়ে আমরা দুটি ফুটওভার ব্রিজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আধুনিক মানের হবে দুটি ফুটওভার ব্রিজ। যেখানে স্কেলেটরের ব্যবস্থা থাকবে। মোড়ের দুই পাশে দুটি ফুটওভার ব্রিজ করা হবে, দুটোতেই যাওয়া আসা করার ব্যবস্থা থাকবে। যেহেতু মোড়টিতে প্রচুর মানুষের যাতায়াত রয়েছে, তাই এটির ব্যবহার অন্যান্য ফুটওভার ব্রিজের তুলনায় বেশি হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের রিভাইস ডিপিপিতে এ দুটি ফুটওভার ব্রিজ রাখা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় থেকে ফুটওভার ব্রিজগুলো হবে। কিছুদিনের মধ্যে ডিপিপি রিভাইসে যাবে। সেখানে আমরা প্রস্তুবটি দিচ্ছি। ডিপিপি পাস হয়ে আসলে আমরা কাজ শুরু করবো।
জানা গেছে, এক যুগ আগেও লালখান বাজার মোড়ে এমন গাড়ির চাপ ছিলো না। তখন সহজে মোড়টিতে রাস্তা পারাপার করা যেতো। ধীরে ধীরে মানুষের চাপ আর গাড়ির চাপ বাড়ে নগরে। হয়েছে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার। ফ্লাইওভারের দ্রুত গতির গাড়ির চাপ পড়ছে লালাখান বাজার মোড়ে। চতুর্মুখী মানুষ ও যানবাহনের অবাধ চলাচল রয়েছে মোড়টিতে। মোড়টিতে ফ্লাইওভারের দ্রæততম গাড়িগুলো যাতায়াত করে। গাড়ির চাপের মধ্যে মোড়টিতে প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার মানুষ রাস্তা পারাপার করেন। এতে থমকে যাচ্ছে গাড়ির গতি, বাড়ছে ঝুঁকিও। নিয়মিত ট্রাফিক পুলিশকে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। এ অবস্থা নিরসনে স্থানীয় বাসিন্দারা বিভিন্ন সময় আন্দোলনও করেছেন। বিভিন্ন সময় সিটি কর্পোরেশন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে সিডিএ মোড়টিতে দুটি ফুটওভার ব্রিজ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শেখ মহিউদ্দিন বাবু বলেন, গুরুত্বপুর্ণ এ মোড়টিতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করেন। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের। এটার জন্য আমরা আন্দোলন পর্যন্ত করেছি। সিডিএ উদ্যোগটি নিয়েছে জেনে আনন্দিত হলাম। জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আশা করি, দ্রæত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সার্বসাধারণের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হবে।