দুই সেকেন্ডে ১ জন আক্রান্ত হয় ৬ সেকেন্ডে ১ জন মারা যায়

15

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্ট্রোক হলে দেরি না করে দ্রুত রোগীকে অবশ্যই স্ট্রোক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ব্রেনের কোষ মারা যায়। এতে মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়। পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন রোগী মারা যায়। গতকাল রোববার সকাল ৮ টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) শহীদ শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে ‘বিশ্ব স্ট্রোক দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সভায় নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান এসব কথা বলেন। ‘মূল্যবান সময় বাঁচান’ এই স্লোগান নিয়ে চমেক হাসপাতালের নিউরোলজী বিভাগ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। এসময় একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘স্ট্রোক ব্যবস্থাপনায় নতুনত্ব কী’ শীর্ষক মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান।
তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি ওয়ার্ডের রোগী ভর্তির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠে। মূলত আমাদের জীবনযাপনের পরিবর্তন এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক বাড়ছে। স্ট্রোকের চিকিৎসা শতভাগ নিরাময়যোগ্য না হলেও নিয়মতান্ত্রিক চলাফেরা করে সুস্থ থাকা সম্ভব।
অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, দুই ধরনের স্ট্রোক রয়েছে। এরমধ্যে ৮৬ শতাংশই হলো ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং ১৪ শতাংশ হলো হেমোরজিক স্ট্রোক। ইস্কেমিক স্ট্রোক তখন হয় যখন মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জমাট বেঁধে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আবার হেমোরজিক স্ট্রোক হলো- যখন মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোক রোগীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদী। তবে বর্তমানে আমাদের নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু করেছি। স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে আসলে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা যতগুলো থেরাপি দিয়েছি, শতভাগ সফল হয়েছে। রোগীরা সুস্থ জীবন যাপন করছেন।
চমেকের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মুহিতুল ইসলাম, ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর, ডা. শিউলি মজুমদার, ডা. পঞ্চানন দাশ, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, ডা. মসিহুজ্জামান আলফা, ডা. তৌহিদুর রহমান, আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. জামান আহম্মদ, ডা. একরামুল আজম শাহেদ, নিউরোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার ও রেজিস্টার ডা. পীযুষ মজুমদার।