দুই সন্তান নিয়ে দুর্বিষহ জীবন রুনার

26

পরিবারের পছন্দে ১০ বছর আগে হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের নতুন পাড়া এলাকার মৌলভী আকমল বাড়ির মোহাম্মদ শরীফের ছেলে প্রবাসী মোহাম্মদ খোরশেদ মিয়ার সাথে একই ইউনিয়নের ফতেয়াবাদ গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে মর্জিনা মমতাজ রুনার বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে সৃষ্ট ভালবাসাটুকু অর্থলোভী স্বামী খোরশেদের কাছে বিয়ের ৫-৬ বছরেই পরিণত হয় চক্ষুশূলে। শুধু তাই নয়, মধ্যরাতে বাসায় এসে যৌতুক নামক অর্থের লোভে স্ত্রী রুনার উপর শুরু হতো স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরমধ্যেই রুনার কোলজুড়ে আসে দুই পুত্র সন্তান। এরমধ্যে রুনা জানতে পারে তার স্বামী আগেও বিয়ে করেছেন। রুনা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। এটি জানার পর দুই সন্তানের দিকে তাকিয়ে সব রকমের নির্যাতন সহ্য করে সংসার করছিল রুনা।
২০১৯ সালের ফেব্রূয়ারি মাসে তাকে রুনাকে মারধর করে মারাত্মক জখম করে ঘর থেকে করে দেয় পাষন্ড স্বামী। তাই নিরুপায় হয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায় রুনা।
গত শনিবার মর্জিনা মমতাজ রুনা তার দুর্বিষহ জীবনে ঘটে যাওয়া এসব কষ্টের সময়গুলো বর্ণনা করেন। রুনা বলেন, অর্থাভাবে দুই সন্তান মো. মুবিন ও মো. মুনতাসিরকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন রুনা। প্রায় এক বছর হতে চললেও তার স্বামী খোরশেদ তাদের কোনো খোঁজ-খবরও রাখছে না। খোরপোষও দিচ্ছে না। দুই সন্তানের পড়ালেখাও অনেকটা অনিশ্চিত। তাই আমি নিরুপায় হয়ে মানবাধিকার কমিশন ও ইউনিয়ন পরিষদ এবং থানা পুলিশের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। সর্বশেষ আমি বাধ্য হয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছি। কারণ আমার জীবন বিপন্ন হলেও আমি চাই আমার দুই সন্তানের জীবনে যাতে অন্ধকার নেমে না আসে।
রুনা আরও জানান, সে (খোরশেদ) কারো ডাকে সাড়া না দিয়ে বরং আমার মায়ের মোবাইলে ফোন করে বলে আমাদের পরিবারের সবাইকে জেলে পাঠাবে। নানান রকমের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমি ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে এ দুর্বিষহ জীবনটা নিয়ে আমি বেশ দুশ্চিন্তায় আছি। শুনেছি সে কিছু দিন আগে তৃতীয়বারের মতো রিজিয়া আক্তার নামে এক গার্মেন্টসকর্মীকে বিয়ে করে সংসার করছে।
ঘটনার সত্যতা জানতে খোরশেদ মিয়ার মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি তৃতীয় বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, রিজিয়া নামে ওই মহিলা আমার মালিকানাধীন বাসায় ভাড়া থাকে। তাছাড়া আমার সাথে রুনার বিবাহ-বিচ্ছেদ (ডিভোর্স) হয়েছে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলাও চলছে। আদালত ওই মামলায় যে রায় দিবে আমি তা মেনে নিব।