দুই শতাধিক বিজ্ঞানীর চ্যালেঞ্জের মুখে ডব্লিউএইচও-এর গাইডলাইনে পরিবর্তন?

19

দুই শতাধিক বিজ্ঞানীর করা চ্যালেঞ্জের মুখে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে নতুন নির্দেশনা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই নির্দেশনায় সংস্থার পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়, কোভিড-১৯ এর কিছু বায়ুবাহিত সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এখনই করোনাভাইরাসকে চূড়ান্ত অর্থে বায়ুবাহিত রোগ বলে ঘোষণা দিতে রাজি নয় তারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে জরুরি ভিত্তিতে আরও গবেষণা করতে হবে। এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে স্বাস্থ্যবিধির গাইডলাইনেও পরিবর্তন আনবে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুরুর দিকে ধারণা করা হতো যে হাঁচি বা কাশির ফলে ছড়ানো ড্রপলেটের মাধ্যমেই করোনাভাইরাস ছড়ানো সম্ভব। সে কারণেই মহামারির শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার জন্য হাত ধোয়াকে অন্যতম একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। স¤প্রতি ৩২টি দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে একটি উন্মুক্ত চিঠি লেখেন। সেখানে বায়ুবাহিত সংক্রমণের বিষয়টিকে মাথায় রেখে করোনাভাইরাস গাইডলাইন হালনাগাদ করার আহ্বান জানান তারা। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করা রসায়নবিদ এবং কোলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোসে জিমেনেজ বলেন, ‘এমন না যে এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে আক্রমণ। এটি একটি বৈজ্ঞানিক বিতর্ক। আমরা এটি জনসম্মুখে নিয়ে এসেছি, কারণ আমাদের মনে হয়েছে বেশ কয়েকবার বলার পরও তারা আমাদের কথা শুনছে না।’ ৭ জুলাই জেনেভায় প্রেস ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচও’র সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণবিষয়ক টেকনিক্যাল প্রধান বেনেডেত্তা অ্যালাগ্রাঞ্জি বলেন, করোনাভাইরাসের বায়ুবাহিত সংক্রমণের প্রমাণ হাজির হচ্ছে তবে এখনও তা চূড়ান্ত নয়। তিনি বলেন, জনসমাগম স্থলে নির্দিষ্ট পরিবেশে, অতিরিক্ত মানুষ, বদ্ধ, আলো-বাতাস প্রবেশের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকার মতো পরিবেশে বায়ুবাহিত সংক্রমণের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদিও এখন প্রমাণ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচও প্রকাশিত নতুন সংক্রমণ নির্দেশনায় বলা হয়, রেস্তোরাঁ, ফিটনেস ক্লাসের মতো কিছু কিছু আবদ্ধ জনাকীর্ণ জায়গায় করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা দেখা গেছে। এগুলো অ্যারোসল ট্রান্সমিশন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘এ ধরনের ঘটনাগুলো দ্রুত তদন্ত করার পাশাপাশি তা কোভিড-১৯ ছড়ানোর ক্ষেত্রে কতটা ভূমিকা রাখছে তাও মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।’