দুই দফায় মেয়াদ বৃদ্ধির পরও শেষ হয়নি কাজ

74

দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পরও কাজ শেষ করা যায়নি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত বাইপাস সড়কের। প্রায় ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদের সময় শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের অর্ধেকেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হতে আরও এক বছরেরও বেশি সময় লাগবে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের ব্যয় যেমন বেড়েছে, তেমনি দীর্ঘ সময় লাগার কারণে নগরবাসী বাইপাস সড়কের সুফল বঞ্চিত হচ্ছে।
নগরীতে ক্রমাগত যানজট বৃদ্ধি ও পরিবহনের চাপ কমানোর লক্ষ্যে সিডিএ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১৩ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয় ৩২ কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। প্রথমে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত। পরবর্তীতে তা দুই বছর বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত করা হয়। দুই দফায় মেয়াদ শেষে প্রকল্পের কাজ হয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পাহাড় কাটা নিষেধ থাকার কারণে প্রকল্পের স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। তাই বেশকিছু দিন কাজও বন্ধ ছিল। এখন সেই জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতা কেটে গেছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রæত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে।
প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল) অনুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরীর প্রাইমারি রোড নেটওয়ার্ক উন্নয়নের মাধ্যমে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ না করে সহজভাবে চলাচল করতে পারবে। প্রকল্পে এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি অব ইউম্যান বরাবর নতুন লুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্যাংক রোড থেকে বায়জিদ বোস্তামী পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ করা হবে।
বাইপাস সড়কের দৈর্ঘ্য হবে ৬ কিলোমিটার। প্রকল্পের আওতায় ৮টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ও ৭টি বক্স কালভার্ট সম্প্রসারণ করা হবে। সড়কটি শাহ আমানত সড়ক, অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক, বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ঢাকা ট্যাংক রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়কের মধ্যে আউটার রিং রোড এর একটি অংশ হিসেবে কাজ করবে।
সিডিএর প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অভিমত, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কাপ্তাই, রাঙামাটি, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুুনিয়া থেকে আসা যানবাহনগুলো চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ না করেই ঢাকা ট্যাংক রোডে পৌঁছতে পারবে। এতে নগরীর যান চলাচল যেমন সহজতর হবে, তেমনি যানজট নিরসন হবে। কমবে জ্বালানি ব্যয়, সাশ্রয় হবে কর্মঘণ্টা।
সড়ক নির্মাণ কাজে নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আগামী মে মাসের মধ্যে প্রকল্পের মূল কাজ সম্পন্ন করতে। এরপর আমরা যানবাহন চালাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবো। ওই অবস্থায় বাকী কাজ শেষ করা হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা এখন কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, বায়েজিদ বাইপাস সড়কটি করা হচ্ছে পাহাড়ি এলাকায়। এতে বেশকিছু পাহাড় কাটা পড়ছে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পাহাড় কাটায় ছিল নিষেধাজ্ঞা। তাই সড়ক নির্মাণ কাজ বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকে। এসব জঠিলতা নিরসন করতে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। এখন সেই জটিলতা কেটে যাওয়ায় কাজ চলমান আছে। তবে বায়জিদ বাইপাস সড়কের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হতে আরও এক বছর সময় লাগতে পারে। এতে প্রকল্পের ব্যয় আবারও বাড়তে পারে।