দিশেহারা বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে চায়

35

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর অনেকটা দিশেহারা অবস্থায় আছে নগর বিএনপি। কেন্দ্র থেকে সুস্পষ্ট কোনো দিক-নির্দেশনা না থাকায় নির্বাচন পরবর্তী কোনো কর্মসূচিতে যায়নি দলটি। তবে আগামীকাল শনিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে আবার মাঠে নামছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমেই কার্যালয়মুখী হতে চায় দলটি।
কথা হলে নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। নির্বাচনের পর দলীয় কার্যালয়ে এটা আমাদের প্রথম কার্যক্রম। আমাদের সকল নেতা এ আয়োজনে সামিল হবেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবনে আলোচনা সভা ও দলীয় কার্যালয়স্থ জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার বাদে আছর থেকে এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
নগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, নির্বাচনের পর থেকে দলীয় কার্যালয়ে তেমন কোনো কার্যক্রম ছিলো না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ জানুয়ারি মিলাদ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।
নির্বাচনের পর নগর বিএনপি দলীয় কার্যালয়মুখী হলেও এখনো দলের প্রধান দুই নেতাই রয়েছেন কারাগারে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অনেক নেতাই কারাগারে থাকায় এবং অন্যান্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও মামলা থাকায় অনুষ্ঠানে জমায়েত নিয়ে সন্দিহান দলটি। তাছাড়া এখনো অনেক নেতাকর্মীই গা ঢাকা দিয়ে আছেন। ফলে নগর বিএনপি কার্যালয়মুখী হলেও এতে প্রাণ ফিরবে বলে মনে করছেন না খোদ বিএনপির নেতারাও। কথা হলে নগর বিএনপির যুগ্মসম্পাদক পদের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখনো কারাগারে ৫ হাজারের অধিক নেতাকর্মী আটক আছেন। যারা বাইরে আছেন তাদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। ধরপাকড়ও অব্যাহত আছে। সব মিলিয়ে দলীয় কার্যালয়ে যেতেও ভয় পাচ্ছেন সবাই। সবার মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে সবক’টিতেই জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা। যদিও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। ফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন, জোর করে তাদের হারিয়ে দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হোসেন, মিরসরাইয়ের নুরুল আমিন, স›দ্বীপের মোস্তফা কামাল পাশা, সীতাকুন্ডের আসলাম চৌধুরী, রাউজানের জসিম উদ্দিন শিকদার, রাঙ্গুনিয়ার নুরুল আলম ও আনোয়ারার সারোয়ার জামাল নিজাম জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচন পরবর্তী আন্দোলনের হুঁশিয়ারি থাকলেও কেন্দ্র থেকে নেতাদের দেওয়া হয়নি সুস্পষ্ট নির্দেশনা। নিজ নিজ এলাকায় কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানো এবং জেলে থাকা নেতাকর্মীদের পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। তবে এরমধ্যেও নেতারা তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের দিকে। তাদের আশা. কেন্দ্র থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসলে বর্তমানের স্থবিরতা কাটতে শুরু করবে। মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হবেন।