দিলীপ বড়ুয়াকে আমুর জবাব

68

চকবাজারে অগ্নিকান্ডের পর রাসায়নিক কারখানা নিয়ে নিজের দায় এড়াতেই সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া তার উপর দায় চাপাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন সাবেক আরেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। পুরান ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে সৃষ্ট আগুনে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর সময় শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া। ওই অগ্নিকান্ডের পর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটলে আবার উঠে আসে রাসায়নিকের গুদামের বিষয়টি।-খবর বিডিনিউজের
শনিবার ১৪ দলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চকবাজারে অগ্নিকান্ডস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দিলীপ বড়ুয়া এই ঘটনার জন্য তার পরবর্তী শিল্পমন্ত্রী আমুকে দোষারোপ করেছিলেন। শেখ হাসিনার ২০১৪ সালের সরকারে শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমু।
দিলীপ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের যে শিল্পমন্ত্রী (আমু) ছিলেন, উনি যদি সিরিয়াসলি কেমিকেল গোডাউন ও কারখানা সরানোর বিষয়টি টেকআপ করে নিতেন, তাহলে হয়ত এতদিনে পুরান ঢাকার কেমিকেল গোডাউন রিলোকেট করা সহজ হত।’
এবার মন্ত্রিসভায় ঠাঁই না পাওয়া আমু গতকাল সোমবার ঢাকার ইস্কাটনে তার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দিলীপ বড়–য়ার বক্তব্যের জবাব দেন। কেন আপনার দোষারোপ করেছে- জানতে চাইলে আমু বলেন, ‘কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন যাতে না হতে হয়, সে জন্য এডভান্স এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।’
জোট শরিক দলটির নেতা দিলীপ বড়ুয়ার এই বক্তব্য কি আলোচনায় আসার জন্য বলে মনে করছেন কি না- প্রশ্ন করা হলে আমু বলেন, ‘আজ পর্যন্ত যে দল একটা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করতে সাহস পায় না, তারা কিসের আলোচনায় আসবে? একটা ইউনিয়ন পরিষদে সদস্য দেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই, তারা কিসের আলোচনায় আসবে?’
গত ৫ বছর মন্ত্রী থাকাকালে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরাতে কী উদ্যোগ নিয়েছিলেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাহী মিটিংয়ে বিসিকের চেয়ারম্যানের অধীনে একটা কমিটি হয়, সেখানে তাদের দয়িত্ব দেওয়া হয়। জায়গাও নির্ধারণের জন্য একটা অবস্থা আমি এসে পেয়েছিলাম। তারপর থেকে জায়গা নির্ধারণ চেষ্টা, সমঝোতার করার চেষ্টা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ৫০ একর জায়গা নির্ধারণ করে বিসিকে পাসও করা হয়েছিল। তারা (মালিক পক্ষ) রাজি হয় নি, স্বাক্ষর দেয়নি। তারা সমঝোতায় আসেনি। তারা কোনো প্লটে যেতে চায় না।’
পুরান ঢাকার রাসায়নিকের কারখানা কিংবা গুদাম শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয় বলেও জানান আমু।
তিনি বলেন, ‘এগুলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোনো শিল্প না। বাংলাদেশে কয়েকটা ফার্টিলাইজার ও সরকারি কারখানা আছে, যা শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। অগ্নিকান্ডের পর বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পাওয়া গেছে ওয়াহিদ ম্যানশনের বেইসমেন্টের গুদামে অগ্নিকান্ডের পর বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক পাওয়া গেছে ওয়াহিদ ম্যানশনের বেইসমেন্টের গুদামে অর্থাৎ এই ধরনের কোনো ব্যবসা করার জন্য, এমনকি শিল্প করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমোদন লাগে না, এটা বাণিজ্যের। এটা অবাক, এটা জিয়ার আমলে করে গেছে।’
পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের কোনো গুদাম নেই বলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা যে দাবি করছেন, তা এক অর্থে ঠিক মনে করেন আমু।
আমু বলেন, এখানে কারও বারান্দায়, কারও এটাচড রুমের মধ্যে, আবার কারও বাথরুমের মধ্যে ছোট ছোট করে ব্যবসা গড়ে তুলেছে। এটাকে ইন্ডাস্ট্রিও বলা যায় না। সুতরাং এখানে যদি বলে থাকে গোডাউন না, তাহলে ঠিকই তো আছে, এখানে গোডাউন নাই। বারান্দা তো আর গোডাউন না।