দানের টাকায় গড়া ফটিকছড়ি করোনা হাসপাতাল

42

স্থানীয়দের দানের টাকায় গড়ে উঠা ফটিকছড়ি কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল কাল ২৭জুলাই উদ্বোধন হবে। ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে এটি উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশেন এর চেয়ারম্যান, ফটিকছড়ির এমপি আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাÐারী। গতকাল এমনটি জানিয়েছেন হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সায়েদুল আরেফিন। তিনি বলেন, ফটিকছড়ির লোকজন অত্যন্ত মানবিক। স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাÐারীসহ প্রিয় ফটিকছড়ির সর্বস্তরের মানুষ যে ভাবে এগিয়ে এসেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্তদের সু-চিকিৎসা করতে যা প্রয়োজন সবই থাকছে। সেন্ট্রাল এসি ও অক্্িরজেন সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক কেবিন এবং আইসোলেশন সেন্টার। চিকিৎসা দিতে ৬জন ডাক্তার, ১৫ জন নার্স ও সহায়তায় থাকবে আরো ২০জন সেচ্ছাসেবক। দলমত নির্বিশেষে সবাই এগিয়ে এসেছে বলেই এ বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ৩তলা বিশিষ্ট ২০শষ্যার হাসপাতালটি সরকারী করন না হবার কারনে কোন জনবল ছিল না। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্ততায় জোড়াতালি দিয়ে চলে আসছে। এমতাবাস্থায় করোনা সংক্রমনের প্রভাব বিস্তার শুরু হলে গত ৮ জুন স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাÐারী উপজেলার স্থানীয় সকল জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে,এলাকাবাসীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য কোভিট-১৯ হাসপাতাল করতে উদ্যোগ গ্রহন করেন। সাংসদ এ হাসপাতাল সংস্কার তদারকির দায়িত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সায়েদুল আরেফিনকে এবং করোনা হাসপাতাল করার জন্য সরকারী অনুদান না থাকায় যেই বিশাল অংকের টাকার দরকার তাতে সহযোগীতা করার জন্য সাংসদ সকল মানবতাবাদী বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবানে সারা দিয়ে অনেক রাজনৈতিক সংগঠন ও মানবতাবাদী ব্যক্তিবর্গ,প্রবাসী, শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীবৃন্দ, সামাজিক সংগঠন, বয়োবৃদ্ধা ও শিশুসহ নানা পেশার শত শত মানুষ আর্থিক অনুদান প্রদানে এগিয়ে এসেছেন। টাকা ছাড়া ও হাসপাতাল করতে ডাক্তার, নার্স ও রোগীদের প্রয়োজনীয় ৬৩প্রকারের বিভিন্ন জিনিষ পত্রের চাহিদা তালিকা মতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন প্রদান করেন ও করে যাচ্ছেন।
এভাবে যার যার অবস্থান থেকে মানবতার ফেরিওয়ালারা এগিয়ে আসায় স্বপ্নের হাসপাতাল নতুন সাজে সজ্জিত। কাজের সার্বক্ষনিক দায়িত্বে রয়েছেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সায়দুল আরেফিন, পৌর মেয়র মোঃ ইসমাইল হোসেন, ইউ এইচ ও নাবিল চৌধুরী ও ডাক্তার জয়নাল আবেদিন মুহুরী।
এদিকে ২০০৭ সালে নির্মিত এ হাসপাতালটি গত ২১ জুন হাসপাতালটি জনগণের অর্থে অস্থায়ীভাবে হাসপাতালটি চালাতে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি লাভ করে। গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সব ধরনের সহয়তার আশ্বাস দেন। অপরদিকে উপজেলার করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে ড. মাহামুদ হাসান ফাউন্ডেশন পক্ষ থেকে একটি এ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়। সে সাথে চালক ও জ¦ালানী খরচ সহ এ্যাম্বুলেন্সের যাবতীয় ব্যয় ফাউন্ডেশন বহন করবে বলে জানান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আখতার উদ্দিন মাহমুদ পারভেজ।
ফটিকছড়ি পৌর সভার মেয়র আলহাজ মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, হাসপাতালটি যেহেতু পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে তাই সব সময় দৃষ্টি রাখতে হবে। হাসপাতালটি গড়তে স্থানীয় সাংসদ সহ উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সহ সর্বস্তরের মানুষ যে ভাবে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছে, তা চির স্বরণীয় হয়ে থাকবে। তাছাড়া বিশ্বে করোনা ভাইরাসের এ সময়ে প্রবাসীরা ও এগিয়ে এসেছে। প্রধান উদ্যোক্তা সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাÐারী এমপি বলেন, মানবিক বোধ থেকে এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে এই উদ্যোগ নিয়েছি।
বিশেষায়িত এ হাসপাতালে প্রতিমাসে খরচ পড়বে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। যার পুরোটাই নির্ভর করছে বেসরকারি সহায়তা এবং জনগণের দানের টাকা উপর। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগীতা কামনা করেন সাংসদ।