দলের সঙ্গে শিগগিরই সংলাপ : সিইসি

11

ঢাকা প্রতিনিধি

নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সহসাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, ঐকমত্য না থাকলে কমিশনের পক্ষে নির্বাচন করা কষ্টকর হবে’।
গতকাল রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সংলাপে যোগ দেন সাবেক সিইসি বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ, ড. এটিএম শামসুল হুদা ও কেএম নূরুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ, সাবেক সচিব মোহাম্মদ সাদিক, জেসমিন টুলি, মো. আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সামনে ছোটখাটো কয়েকটি নির্বাচন আছে, ঈদ আছে। তারপরই আমরা সংলাপ শুরু করবো। যখন মতবিনিমিয় করবো আমরা সাজেশন চাইবো। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো আরও পদ্ধতিগত কী পরিবর্তন করা যেতে পারে, সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তা চাইবো। ব্যক্তি নয়, সিস্টেম যদি উন্নত করতে পারি, নির্বাচন অনেক বেশি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে’।
সাবেক কমিশনারদের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অতিথিরা বলেছেন, বর্তমান সিস্টেম যে আছে, এখানে খুব বেশি ভালো করা সম্ভব নয়। এটা একটু কমবেশি কিছু হতে পারে। আমরা যদি দৃঢ় থাকি, আইন দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি, তাহলে অনেকটা উন্নয়ন সম্ভব’।
সিইসি জানান, সাবেক সিইসি বিচারপতি আবদুর রউফ সাহেব বলেছেন, প্রার্থী অনুযায়ী নয়, দলভিত্তিক নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচনে দেখা গেল যে, অনেক আগে থেকে দলগুলো তাদের টোটাল প্রার্থীর নাম দিয়ে যাবে। সবাই তিনশ’ আসনে প্রার্থী দিলো। পার্টি ক, খ, গ, ঘ। যে যত ভোট পেয়েছে, সেভাবে আসন পাবে। এই ধরনের একটা সিস্টেম আছে। তবে এটা আমাদের বিষয় নয়। দলগুলোকেই দেখতে হবে।
সিইসি বলেন, ‘আমরা যে শপথ গ্রহণ করেছি, বর্তমান যে আইনি কাঠামো আছে, সাংবিধানিক কাঠামো আছে- এর মধ্যেই আমাদের নির্বাচন করতে হবে। কেউ কেউ বলেছেন, একাধিক দিনে নির্বাচন করলে আইন-শৃঙ্খলা মোতায়েন সহজ হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। কেউ কেউ বলেছেন, এতে সমস্যাও হবে। এ নিয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। কাজেই একাধিক দিনে নির্বাচন করলে আমাদের জন্য অসুবিধাও হতে পারে। ওই ধরনের প্রস্তুতি আমাদের নেই’।
দলগুলোকে পরামর্শ দিতে সমস্যা কোথায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনও দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করিনি। সবাই বলেছেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচন যদি ইনক্লুসিভ না হয়, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাস্তব অর্থে থাকবে না। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনেকটা নষ্ট হেয়ে গেছে। এই কালচারের মধ্যে কিছু ইতিবাচক গুণ আনতে হবে। তাদের মধ্যে পরম সহিষ্ণুতা, ঐকমত্য যদি না থাকে, নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে খুব ভালো নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, ঐকমত্য না থাকলে আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা কষ্টকর হবে। এটা আমরা যেমন আগে বলেছি, উনারাও বলেছেন’।
কুমিল্লা- ৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনকে ভোটের এলাকা ছাড়ার চিঠি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি- এ বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমাদের কিছু আইনগত দিক আছে। কিছু ক্ষমতা আংশিক, কিছু পরিপূর্ণ। কুমিল্লায় যা বলা হয়েছে- সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনি এলাকায় থাকতে পারবেন না। সংসদ সদস্য এই আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন বলে প্রতিয়মান হয়েছে, আমরা এলাকা ছাড়তে বলেছি। উনি এলাকা ছাড়েননি। উনি মামলা করেছেন, আমরা ফলাফল পাইনি’।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন কাউকে রিকোয়েস্ট করি, জোর করে একজন সংসদ সদস্যকে- উনাকে বলাটাই ইনাফ। উনাকে যদি আমরা বলে থাকি কাইন্ডলি নির্বাচন আচরণ বিধিতে এটা আছে, আপনি যদি একটু সরে থাকেন, নির্বাচন ভালো হয়। সেই চিঠিটা আমরা প্রকাশ্যে দিয়েছি। এটাই একজন সংসদ সদস্যের জন্য ইনাফ, এটাকে অনার করা। যদি সেটাকে উনি অনার না করে থাকেন, আমাদের তেমন করার কিছু থাকে না’।