দলীয় কোন্দলের ক্ষোভ গাছের ওপর

11

বোয়ালখালী প্রতিনিধি

বোয়ালখালী উপজেলার জৈষ্ঠ্যপুরা পাহাড়ে আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ক্ষোভ মেটাতে কাটছেন গাছ। তাদের রোষানলে কাটা পড়েছে ফলদ গাছ ও বনজ গাছের চারা। এতে নিধন হচ্ছে পাহাড়ি বাগান।
জানা গেছে, উপজেলার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম রাজার ভাই শওকত হোসেনের বাগানের দেড় সহস্রাধিক গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। গত ৫ আগস্ট এ বিষয়ে শওকত হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ওইদিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন খোকনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা মো. ইউছুপের বাগানের শতাধিক গাছ কেটে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে ৬ আগস্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মো. ইউছুপ। তিনি দাবি করছেন তার বাগানের শতাধিক গাছ শওকত পূর্ব বিরোধের আক্রোশে কেটে ফেলেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, দুই আওয়ামী পরিবারের অভ্যন্তরীণ বিরোধেই মূলত গাছগুলো কাটা হয়েছে। তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। পাহাড় দখল বেদখল নিয়ে এ বিরোধের সূত্রপাত আওয়ামী লীগ নেতা রাজা মিয়া ও ইউছুপের মধ্যে। বিরোধ মিমাংসায় কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছিলো। গত ২৫ জুন আওয়ামী লীগের জ্যৈষ্ঠপুরা ওয়ার্ড সম্মেলনে হাতাহাতির মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে এ বিরোধ। এর জের ধরে ১ জুলাই শুক্রবার দুপুরে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইউছুপ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. রাশেদুল আলম আহত হন। সর্বশেষ এর রেশ গড়ায় গাছের ওপর। তাদের রোষানলে কাটা পড়ে দুই সহ¯্রাধিক আম, মাল্টা, লেবু ও সেগুন চারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
যুবলীগ নেতা মো. ইউছুপের বাগানের শতাধিক গাছ কাটার প্রতিবাদে ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে জৈষ্ঠ্যপুরায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এসময় দাহ করা হয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা রাজা মিয়া ও তার ছোট ভাই মো. শওকতের কুশপুত্তলিকা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাজা মিয়া ও তার পরিবার একের পর এক পাহাড় দখল করে নিচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে রেজাউল করিম রাজা বলেন, ‘তারা বানোয়াট অভিযোগ এনে এ ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা মামলা করবো।’
মো. ইউছুপ জানান, ‘রাজা মিয়া ও তার পরিবার সাধারণ মানুষের পাহাড়ি জায়গা দখল করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাগানের শতাধিক গাছ কেটে দিয়েছে। তাই এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন।’