দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের দাবি বেআইনি : যুক্তরাষ্ট্র

32

দক্ষিণ চীন সাগরের বেশিরভাগ অংশের সম্পদের উপর বেইজিংয়ের দাবিকে ‘পুরোপুরি বেআইনি’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, বিতর্কিত জলসীমার নিয়ন্ত্রণ পেতে বেইজিং যে দউস্কানিমূলক প্রচারণা ও তর্জন-গর্জন’ করছে, তা ঠিক হচ্ছে না। চীন তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়েছে। বলেছে, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আমেরিকানরা ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে তথ্য ও আন্তর্জাতিক আইনের বিকৃতি ঘটাচ্ছে’।
বিবিসি জানিয়েছে, বিতর্কিত এ জলসীমার কৃত্রিম দ্বীপে চীন সামরিক স্থাপনা নির্মাণ করলেও সেখানে ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামেরও মালিকানার দাবি আছে। দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন অংশের মালিকানা নিয়ে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর বিরোধ শতাব্দি পুরনো। তবে সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বেইজিংয়ের আগ্রাসী ভূমিকায় অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বেড়েছে। সাগরের ‘নাইন-ড্যাশ লাইন’ নামে পরিচিত এলাকার মালিকানা দাবির পাশাপাশি চীন সেখানে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ, টহল ও সামরিক উপস্থিতির পরিমাণ বাড়িয়েই চলেছে।
বিতর্কিত এ সামুদ্রিক এলাকায় বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ আছে। জলসীমাটি মৎস শিকার ও বাণিজ্যিক জলযান চলাচলের ক্ষেত্রেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের উৎস, হংকং ও শিংজিয়ানে চীনের ‘নিপীড়ন’, বাণিজ্য চুক্তি ও তাইওয়ান নিয়ে বেইজিং-ওয়াশিংটনের টানাপোড়েনের মধ্যেই সোমবার মার্কিন প্রশাসন দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে তাদের দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করল।
পম্পেওর বিবৃতিতে স্পার্টলি দ্বীপপুঞ্জের আশপাশে ১২ নাটিকাল মাইলের বাইরের অংশে বিশেষ করে ভিয়েতনামের কাছে ভ্যানগার্ড ব্যাংক, মালয়েশিয়ার কাছে লুকোনিয়া শোলস, ব্রæনেইয়ের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ইন্দোনেশিয়ার কাছে নাতুনা বেসার ও এর আশপাশের জলসীমায় চীনের সব দাবি খারিজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, দক্ষিণ চীন সাগরের বেশিরভাগ অংশের সম্পদের উপর বেইজিংয়ের দাবি এবং সেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ পেতে তারা যে ধরনের তর্জন-গর্জন ও প্রচারণা চালাচ্ছে, তা একেবারেই বেআইনি। দক্ষিণ চীন সাগরকে বেইজিং তার সামুদ্রিক সাম্রাজ্য বানাতে চাইলেও বিশ্ব তা বরদাশত করবে না,” বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রত্যুত্তরে টুইটারে দেওয়া বিবৃতিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত চীন দূতাবাস বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্দেশ্যমূলকভাবে তথ্য এবং জাতিসংঘের সমুদ্র আইনসহ আন্তর্জাতিক আইনের বিকৃতি ঘটাচ্ছে।”