দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান পিএবি সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত সমাপ্ত করা জরুরি

92

 

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম চমক, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিতব্য ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’। বঙ্গবন্ধু টানেল ও তৎসংশ্লিষ্ট সংযোগ সড়কের কাজ প্রায় ৮৫ ভাগ সম্পন্ন। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ৬ লেনের পিএবি সড়কের ৩ কিলোমিটার যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত। বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ৮.১০ কিলোমিটার ৬ লেনের পিএবি সড়কের অংশবিশেষ নিয়ে যথেষ্ট সঙ্কার অবকাশ রয়েছে। আনোয়ারা প্রতিনিধির প্রতিবেদনে যদিও বলা হয়েছে ৮.১০ কি.মি পিএবি সড়কের ৬ লেনের কাজে ৩ কি.মি. যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে কথাটি বাস্তবে গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা পিএবি সড়কের যে দশা তাতে মনে হয় টানেলের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হলেও পিএবি সড়কের ৬ লেনের কাজ যথা সময়ে শেষ হবার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। যে ৩ কি.মি যান চলাচলের কাজ উন্মুক্ত করা হয়েছে তাও অর্ধেকে আটকে আছে। সম্পূর্ণ ৬লেন উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। টানেল সংযোগ সড়কের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে এতে সন্দেহ নেই। আগামী ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু টানেল উন্মুক্ত করা সম্ভব হলেও পিএবি সড়কের ৬ লেনের কাজ সমাপ্ত হবে বলে মনে হয় না। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ৬ লেনের কাজের টিকাদার আরো ৬ মাসের সময় চেয়েছে সেতু বিভাগের কাছে। এতে বোঝা যায় টানেল ও টানেল সংযোগ সড়ক এবং ৪ লেনের আনোয়ারা সদর পর্যন্ত সকল নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলেও দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান পিএবি সড়কের নির্দিষ্ট ৮.১০ কিলোমিটার কাজ খুবই জটিল। দীর্ঘদিন হতে পিএবি সড়কে যানজটজনিত দুর্ভোগে আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়ার অংশ বিশেষ এবং বাঁশাখালী, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালীর বিপুল যাত্রী অতিষ্ঠ। সরকার টানেল দিয়ে চাতরী হতে শিকলবাহা ক্রসিং হয়ে আরকান সড়ক দিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার পরিকল্পনা মাথায় রেখে কাজ করছে। যাতে কক্সবাজারের দূরত্ব আরো ৮.১০ কিলোমিটার বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পিএবি সড়ক হয়ে বাঁশখালীর ওপর দিয়ে কক্সবাজার পৌঁছতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যায়। আনোয়ারা কালাবিবির দিঘির মোড় হতে পিএবি সড়কের আনোয়ারা- বাঁশাখালী অংশ খুবই ছোট। যার কারণে চাতুরী হতে উল্টো দিকে ৮.১০ কি.মি. অতিরিক্ত পথের দূরত্ব গুনতে হবে কক্সবাজারের যানবাহনসমূহকে। আনোয়ারার অংশবিশেষ এবং বাঁশখালী সড়কটিকে চারলেনে উন্নিত করলে খুবই দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের সব প্রান্ত হতে কক্সবাজারের যাত্রা দ্রুতায়ন হবে। দেশবাসী কক্সবাজারের দূরত্ব উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমানোর পক্ষে মত প্রকাশ করে বলেন-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন বাঁশখালী হয়ে কক্সবাজার যাতায়াতের সুবিধার্থে আনোয়ারা কালাবিবির দিঘি হতে পেকুয়া পর্যন্ত সড়কটি চার লেন করে কক্সবাজারের দূরত্ব কমানোর ব্যবস্থা করেন। টানেল ২০২২ সালের ডিসেম্বরের নির্ধারিত সময়ে উন্মুক্ত করা হবে এমন বিশ্বাস আমাদের। কিন্তু পিএবি সড়কের ৮.১০ কি.মি. উন্নয়ন কাজ দ্রæত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে বিশেষ ব্যবস্থা প্রয়োজন। ৬ লেনের কাজ সমাপ্ত না হলে টানেল হয়ে কক্সবাজার যাতায়াত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। তা ছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের যেসব এলাকায় পৌঁছতে পিএবি সড়ক ব্যবহার হয়, সেসব এলাকার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনা এবং বিচিত্র দুর্ভোগের শিকার হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। জনস্বার্থে সমগ্র দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দ্রুত ও নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থায় পিএবি সড়কের ৬ লেনের কাজ দ্রুত সমাপ্তের ব্যবস্থা করা জরুরি। এ ব্যাপারে টিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযাগিতার হাত সম্প্রসারণ করে যত দ্রæত সম্ভব ৬ লেনের কাজ সমাপ্ত করা যায় ততই দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীসহ সমগ্র দেশের যাত্রীদের জন্য মঙ্গল।