থেমে থেমে বৃষ্টিতেও পানি উঠছে নগরীর নিম্নাঞ্চলে

22

এম এ হোসাইন

আকাশজুড়ে কালো মেঘের ছড়াছড়ি। আবার খানিকটা রোদ্দুর। আলো-আঁধারির এ খেলার মাঝেই ঝুম বৃষ্টি। গতকাল রবিবার দুপুরের পর থেকে আকাশে কালো মেঘের এ খেলা ও বৃষ্টির মেলা। যদিও ভোরে মাঝারি বৃষ্টি আরেক দফা পতিত হয় নগরীতে। এতে নিম্নাঞ্চলে রাস্তায় পানির দেখা মেলে। এছাড়া দিনভর ছিল গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত। আজও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গত শনিবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে নগরীতে। গতকাল রবিবার বিকাল পর্যন্ত পূববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৬৬ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব বিরাজমান থাকায় আজও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে কর্ণফুলী নদীতে পানির উচ্চতা বাড়তে পারে। ৫ মিটারেরও বেশি উচ্চতা হতে পারে নদীর পানি। এতে জোয়ারের পানিতে নগরীর নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে পারে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিত চৌধুরী জানান, আজ সোমবার চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে সাময়িকভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। সে সাথে অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছ। তবে কিছু কিছু জায়গায় মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক হতে ঘণ্টায় বাতাস ১২ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের জন্য সতর্কবাণী নেই। নদী বন্দরের জন্য এক নম্বর নৌ-সতর্কতা সংকেত রয়েছে।
আজ সোমবার প্রথম ভাটা শুরু হবে রাত ১টা ১৪ মিনিটে। প্রথম জোয়ার শুরু হবে সকাল ৭টা ৫২ মিনিটে। দ্বিতীয় ভাটা শুরু হবে দুপুর ১টা ২৩ মিনিটে। দ্বিতীয় জোয়ার শুরু হবে রাত ৮টা ২৫ মিনিটে। কর্ণফুলী নদীতে পানির উচ্চতা সর্বনিম্ন দশমিক ৮১ মিটার থেকে ৫ দশমিক ১৩ মিটার হতে পারে।
গত শনিবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলেও রবিবারের শুরুটা হয় বৃষ্টি দিয়েই। ভোরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয় অনেক জায়গায়। থেমে থেমে চলা বৃষ্টিপাত কখনো গুঁড়িগুঁড়ি, আবার কখনো রূপ নেয় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতে। দিনের শুরুটা বৃষ্টি দিয়ে হলেও সকালে আকাশ ছিল অনেকটা পরিষ্কার। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও প্রয়োজনে মানুষ বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। দুপুর হতেই আকাশে কালো মেঘের খেলা শুরু হয়। বিকালে কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। অন্ধকারচ্ছন্ন হয়ে পড়ে নগরের পরিবেশ। বিকালে বৃষ্টিপাতের কারণে নিম্নাঞ্চলে সড়কে পানি উঠে যায়। থেমে থেমে চলা এ বৃষ্টিপাত সন্ধ্যা থেকে আবার গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে রূপ নেয়। এমন বৃষ্টিতে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষদের পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে।
নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও প্রকল্প পরিচালক মো. শাহ আলী বলেন, বৃষ্টি হলে পানি উঠছে কিন্তু সেটা স্থায়ী থাকছে না। এখন কোথাও পানি আটকে থাকছে না। খালের মধ্যে দেওয়া বাঁধগুলো কেটে দেওয়ায় এখন জোয়ারের পানিও প্রবেশ করছে। আমরা মনে করি, প্রকল্পের কাজের কারণে পানি এখন দ্রুত নামছে। প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে আমরা আশাবাদি।
এদিকে বরাবরের ন্যায় গতকাল বৃষ্টিতেও নগরীর দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, জিইসি মোড়, ওয়ারল্যাস, প্রবর্তক মোড়, শুলকবহর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা, খাতুনগঞ্জ, কাতালগঞ্জ, আগ্রাবাদ সিডিএ, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, কাপাসগোলা, পশ্চিম বাকলিয়ারসহ নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকার রাস্তায় পানি দেখা মিলেছে। সকাল-বিকাল দুই বার পানি উঠে অনেক এলাকায়। খাল ও নালার পানি প্রবাহে বাঁধার মুখে পড়ে রাস্তায় প্রবাহিত হয় পানি। যদিও কোথাও দীর্ঘক্ষণ পানি জমে থাকার খবর পাওয়া যায়নি।