তেলের দাম বৃদ্ধিতে চট্টগ্রামে ২৭ হাজার মৎস্যজীবীর মাঝে হতাশা

11

আবেদ আমিরী, পটিয়া

জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধিতে চট্টগ্রামের ২৭ হাজার ২৩ জন মৎস্যজীবীর মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। তেলের দামবৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে। কমে যেতে পারে আহরিত মাছের পরিমাণ এবং বাড়বে দাদনদার ও বিভিন্ন এনজিওর ঋণের চাপ।
একদিকে তেলের দাম বৃদ্ধি, অন্যদিকে দাদনদার ও আড়তদারদের তাড়াসহ সব মিলিয়ে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’-এর মতো অবস্থা। এতে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের মৎস্যজীবীদের জীবন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৬৫ দিন নিশেধজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই থেকে মৎস্য শিকারে নামেন জেলেরা। শুরু থেকে জো থাকায় আশানুরূপ মাছও পেয়েছেন তারা। এর মাঝেই বেড়েছে তেলের দাম। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন সামুদ্রিক মৎস্যজীবীরা।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৭ হাজার ২৩ জন। সরকারের দেয়া ৬৫ দিনের নিষেধজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ শিকারে যাচ্ছেন তারা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও সমুদ্র পুরোপুরি শান্ত হয়নি। সমুদ্র অশান্ত হলেও ভয় নেই জেলেদের। তাদের দুচোখে কেবল ইলিশসহ নান জাতের মাছ শিকারের স্বপ্ন। সে স্বপ্নে জেলে পল্লীগুলোতে চলছে উৎসব। চারদিকে সাজসাজ রব। এর সাথে রয়েছে দাদন ব্যবসায়ীদের উৎপাত।৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার মাঝেই মৎস্যজীবীরা বোট ও ট্রলারের ছোট-বড় সমস্যাগুলো মেরামত, জালের ত্রুটি দূর করা ও বুননসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন জেলেরা।
গতকাল রবিবার কয়েকজন জেলে জানান, জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধি তাদের জীবনমানকে আরও নিম্নমুখি করবে। আগে তেল কিনতাম ৮০ থেকে ৮৬ টাকা করে। এখন দাম ১১৪ টাকা। মাছ শিকারের পর খরচ বাদ দিলে আমাদের আর কিছুই থাকছে না। তেলের সাথে পাল্লাদিয়ে বেড়ে যাচ্ছে বরফসহ অন্য জিনিসপত্রের দামও।
তারা বলেন, অনেকে এতোদিন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে চলেছেন। তেলের দাম এভাবে বাড়লে কীভাবে মাছ শিকার করব? লোকসান গুণতে গুণতে ট্রলার বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
কর্ণফুলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্বপন দত্ত জানান, মৎস্যবীজীরা মাছ পাওয়ার উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা প্রায় সবাই দাদনের বেড়াজালে বন্দী। তেলের দামবৃদ্ধির ফলে তাদের উপর বাড়তি একটা চাপ তৈরি হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্ত (ডিএফও) ফারহানা লাভলী বলেন, তেলের দামবৃদ্ধির কারণে মৎস্যজীবীদের উপর কী ধরনের প্রভাব তৈরি হতে পারে, তা জানতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। তবে উৎপাদন কমবে না। এ মৌসুমে শুরু থেকে সামুদ্রিক মাছ ধরার পরিমাণ সন্তোষজনক।