তিন দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে

32

প্রতিবেশীর হামলায় আহত হওয়ার পর গত ৩ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বুদরুচ মিয়া (৬৫)। একই ঘটনায় বুদরুচ মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ (৩৮) আহত হন। হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে এখনো পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।
গত শনিবার দুপুর একটায় পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউসুপের পাড়া এলাকায় বাড়ির সীমানা বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ দা দিয়ে কুপিয়ে পিতা ও পুত্রকে আহত করে। এসময় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া হাসপাতালে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থা গুরুতর হওয়া আহত পিতা ও পুত্রকে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে আহত বৃদ্ধা বুদরুছ মিয়া মারা যান। ব্যাংকার পুত্র হাসপাতালে এখনো সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আছেন।
এ ঘটনায় পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউসুপেরপাড়া বাসিন্দা মৃত জালাল আহমদের পুত্র নুরুল আলম (৪৫), একই এলাকার জালাল আহমদের পুত্র মাহবুবুল আলম (৩৯), নুরুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ নাবিল (১৮), নুরুল আলমের স্ত্রী শাহিন আক্তার, একই ইউনিয়নের রশিদাবাদ গ্রামের চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী আয়শা আক্তার (৪৫)।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিবেশী নুরুল আলমের সাথে নিহতের পরিবারের সীমানা বিরোধ রয়েছে। নিহত বুদরুছ মিয়া বেশ কয়েক বার স্থানীয়ভাবে সীমানা বিরোধ নিস্পত্তিপর জন্য প্রতিবেশীদের অনুরোধ করেন। প্রতিবেশী নুরুল আলম গং তা না মেনে প্রাপ্য অংশের চেয়ে বেশি জমি দখল করে রাখে। নিহতের পরিবার প্রতিপক্ষকে বাড়ির সীমানা চিহ্নিত করার জন্য বেশ কয়েক বার অনুরোধ করেন। প্রতিবেশী নিহতের পরিবারকে নিজ উদ্যোগে সীমানা চিহ্নিত করার জন্য বলে। এরই ধারাবাহিকতায় নিহতের পরিবার সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা চিহ্নিত করে। গত শনিবার দুপুরে পিতা-পুত্র নামাজ পড়ার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সীমানা চিহ্নিত করার জেরে ক্ষুব্দ প্রতিবেশী নুরুল আলম, তার পুত্র ও লোকজন দা ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় পিতা ও পুত্রকে। এরপর স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে পটিয়া ও পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আইসিইউ সুবিধা না পাওয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয় পিতা ও পুত্রকে। সেখানে ৩ দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে যায় বুদরুছ মিয়া। পুত্র এখনো সংজ্ঞাহীন থাকায় পিতার মৃত্যুর খবর এখনো জানতে পারেনি। নিহতের ২ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহতের আরেক পুত্র মামুনুর রশিদ জানান, ঘটনার পর পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তাতে ৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। তার পিতা আইসিইউতে থাকা অবস্থায় মারা যায়।
পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, ২ তারিখের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলাটি হত্যা মামলায় পরিণত করা হবে। নিহতের লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।