তিনি ব্যক্তিগতভাবে কার সঙ্গে কি বললেন তার দায় সরকার কিংবা দলের নয়

20

পূর্বদেশ ডেস্ক

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একুশ আগস্ট বিএনপির হত্যা ও প্রতিহিংসার রাজনীতির ভয়াল নজির। তিনি বলেন, হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে জন্ম নেয়া বিএনপির হত্যা ও প্রতিহিংসার রাজনীতির ভয়াল নজির হচ্ছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। বিএনপি ও তাদের দোসরেরা জামায়াত, জঙ্গিগোষ্ঠী যদি রাজনীতিতে দাপিয়ে বেড়ায়, তাহলে এই অপরাজনীতি বন্ধ হবে না। মন্ত্রী গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। খবর বাসস।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালের ভয়াল ২১ আগস্টে ঢাকায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হাওয়া ভবন ও তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় বেগম খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে। গ্রেনেড হামলায় আহত সাক্ষী এবং শরীরে স্পিন্টারবাহী মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ২৪ জন নিহত এবং ছয়জন সংসদ সদস্যসহ পাঁচ শতাধিক আহত হয়েছিলেন। অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। আহতরা সবাই গ্রেনেডের স্পিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া এবং তার দল পার্লামেন্টে একটি নিন্দা প্রস্তাব আনতে দেয়নি বরং হাস্যরস করা হয়েছে। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলা হয়েছে যে আমাদের নেত্রী না কি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর কারাগার এবং আরো বিভিন্ন স্থানে গ্রেনেড পাওয়া গিয়েছিলো। পরে জানা যায়, কারাগার থেকে কয়েদিদের ধরে এনে এই গ্রেনেড হামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছিলো এবং হামলার আগে বঙ্গবন্ধুর খুনীদেরও দেশে আনা হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুকন্যা বেঁচে গেছেন জানার পর সেই খুনীরা আবার বিদেশে চলে যায়। বেগম খালেদা জিয়া সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো এবং ডিজিএফআইকে তদন্ত করার অনুমতিও দেয়নি।
জাতির পিতার হত্যাকাÐের পর জিয়াউর রহমান সেই হত্যার বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ আইনে রূপান্তর করে যেভাবে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিলেন, যেভাবে সেনাবাহিনীর অফিসার এবং জওয়ানদের বিনাবিচারে মধ্যরাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন, যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা-নির্যাতন করা হয়েছিলো, ২০১৩-১৪-১৫ সালে যেভাবে মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়, ২০০১ সালে নির্বাচনের পর নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে গ্রামের পর গ্রাম নির্যাতন চালিয়ে যেভাবে সংখ্যালঘুদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছিলো, যে কারণে আমাদের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে হয়েছিলো, গ্রেনেড হামলা এবং এসব ঘটনাই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিএনপির কাছে এ সবের জবাব চাই, বলেন ড. হাছান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে তারা গুম, খুনের কথা বলে, অনেকে গুম হয়েছে বলে প্রচার করেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে যে তারা ফিরে এসেছে। তারা তাদের নেতা সালাহউদ্দীন সাহেবও গুম হয়েছিলেন বলেছে পরে তাকে মেঘালয়ে খুঁজে পাওয়া গেছে। এবং আরো অনেককেই খুঁজে পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারার তাদের নেতা জামাল উদ্দীনকে তো বিএনপিই হত্যা করেছে। এরকম অনেক বিএনপি নেতাকে তারা নিজেরাই গুম করেছে। আজকে তারা গুম, খুনের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরোত্তর বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স¤প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমাদের দলের ভিত জনগণ। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতেই বলীয়ান। আমরা জনগণের শক্তিতেই বিশ্বাস করি। জনগণের রায় নিয়েই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় সরকার পরিচালনা করেছে এবং ক্ষমতায় গেছে। আমরা মনে করি, জনগণ ছাড়া অন্য কেউ সরকার টিকিয়েও রাখতে পারে না এবং দেশ পরিচালনার দায়িত্বও দিতে পারে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তার বক্তব্য ডিসটর্ট করা হয়েছে। আর তিনি ব্যক্তিগতভাবে কার সাথে কি বলেছেন, কি গল্প করেছেন, সেটার দায়ভার সরকার কিংবা দলের নয়। সাংবাদিকরা আরো এমন সা¤প্রতিক কিছু মন্তব্য তুলে ধরলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকলে দায়িত্বশীলভাবে কথা বলা দরকার। আমি নিজে কথা বলার সময় খুব সতর্ক থাকি।