তালেবানের দেড় হাজার বন্দিকে মুক্তির নির্দেশ প্রেসিডেন্ট ঘানির

66

তালেবানের দেড় হাজার বন্দিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। বুধবার এ সংক্রান্ত ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। দেশটির প্রভাবশালী এ দলটির সঙ্গে শান্তি আলোচনায় পৌঁছাতে সমঝোতার অংশ হিসেবেই তাদের মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী এসব বন্দিকে যুদ্ধের ময়দানে না ফেরার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বিনিময়ে তালেবানরা এক হাজার সরকারি সেনাকে হস্তান্তরে সম্মত হয়েছে। ডিক্রি অনুযায়ী, ১৫০০ বন্দিকে ১৫ দিনের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। প্রতিদিন ১০০ বন্দি আফগান জেল থেকে বের হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পরই এ উদ্যোগ নিলো কাবুল। যদিও এর আগে তালেবান বন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিলেন দেশটির মার্কিন সমর্থিত প্রেসিডেন্ট। তবে বুধবারের ডিক্রিতে স্পষ্টতই তিনি আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন কিংবা সরে আসতে রীতিমতো বাধ্য হয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, মুক্তির পাশাপাশি আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানের আলোচনাও অব্যাহত থাকবে। যদি আলোচনা অগ্রসর হয় তাহলে আফগান সরকার প্রতি দুই সপ্তাহে ৫০০ করে বন্দিকে মুক্তি দেবে। সব মিলিয়ে মোট পাঁচ হাজার তালেবান মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। চুক্তি অনুযায়ী, তালেবানের সহিংসতা কমিয়ে আনা অব্যাহত রাখতে হবে। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যাতে আল-কায়েদা বা অন্য কোনও চরমপন্থী সংগঠন পরিচালিত হতে না পারে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস বাড়ানোর অংশ হিসেবে বন্দি মুক্তি দেওয়া হচ্ছে যাতে আফগানিস্তানের দীর্ঘ ১৮ বছরের যুদ্ধ বন্ধ করতে উভয় পক্ষ সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে। মঙ্গলবার আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্দি মুক্তির দাবির মুখে তা পিছিয়ে যায়। এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তালেবান নেতাদের কাউন্সিলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য। তিনি বলেন, তারা যেসব বন্দিদের মুক্তি চান তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কাবুলের মার্কিন সমর্থিত সরকার এমন বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে যারা বয়স্ক, অনেক অসুস্থ বা যাদের কারাদন্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তালেবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন মঙ্গলবার এক টুইটে বলেন যে, তারা শুধু সেই বন্দিদেরই গ্রহণ করবে যাদের নাম তালিকায় আছে। আর প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরিত ডিক্রি অনুযায়ী, ‘বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বাকি থাকা সাজার মেয়াদ’ দেখে মুক্তি দেওয়া হবে।