তামাকের ব্যবহার কমাতে ৭ সুপারিশ

57

তামাক পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনতে আসন্ন বাজেটে সাত দফা সুপারিশের বাস্তবায়ন চায় সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করছেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে এইসব সুপারিশের বাস্তবায়ন হলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করা সম্ভব। ত্বরান্বিত করা সম্ভব এমজিডি (সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়নের পথ।
আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিতব্য বাজেটে তামাক পণ্যের ব্যবার কমিয়ে আনতে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো- ১. তামাকপণ্যের সহজলভ্যতা কমিয়ে আনতে মূল্যস্ফীতি এবং আয় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক নিয়মিতভাবে বাড়াতে হবে। ২. বিভিন্ন তামাকপণ্য ও ব্রান্ডের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য ব্যবধান কমিয়ে আনার মাধ্যমে তামাক ব্যবহারকারীর ব্রান্ড ও তামাকপণ্য পরিবর্তনের সুযোগ সীমিত করতে হবে। ৩. সকল ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকারীকে সরকারের করজালের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ৪. পর্যায়ক্রমে সকল তামাকপণ্য অভিন্ন পরিমাণে (শলাকা সংখ্যা এবং ওজন) প্যাকেট বা কৌটায় বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ৫. একটি সহজ এবং কার্যকর তামাক কর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন (৫ বছর মেয়াদি) করতে হবে। ৬. সকল প্রকার ই-সিগারেট এবং হিটেড (আইকিউওএস) তামাকপণ্যের উৎপাদন, আমদানি এবং বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ৭. স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বৃদ্ধি (২%) করতে হবে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) স¤প্রতি এ সব সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি এই সাত দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত করার সহজ হবে। এবং এর মধ্যদিয়ে (টেকসই উন্টনয়ন লক্ষ্যমাত্রা) এসডিজি বাসবায়নের পথ ত্বরান্বিত হবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা ইতোমধ্যেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) তামাকের ব্যবহার কমাতে সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা ৪টি থেকে কমিয়ে ২টিতে (নিম্ন এবং উচ্চ) নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়াও তারা বিদ্যমান ৩৫ টাকা এবং ৪৮ টাকা এই দুইটি মূল্যস্তরকে একত্রিত করে একটি মূল্যস্তর (নিম্নস্তর) এবং ৭৫ টাকা ও ১০৫ টাকা মূল্যস্তরকে একত্রিত করে আরেকটি মূল্যস্তরে (উচ্চস্তর) নিয়ে আসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারটের খুচরা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করারও প্রস্তাব করেছে প্রজ্ঞা। উচ্চস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ন্যূনতম ১০৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা এবং সকল ক্ষেত্রে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটে ৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছে প্রজ্ঞা।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরেই তামাক পণ্যের করকাঠামো পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছি, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট নীতি-নির্ধারকরাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তামাকপণ্যে করারোপরের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে রাজস্ব আহরণের চেয়ে জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।