তাপমাত্রা বাড়ার আভাস

9

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি কালবৈশাখী মৌসুমে এ যাবত দুু’দফা কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টির দেখা পেয়েছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের কোনও কোনও এলাকার বাসিন্দারা। সর্বশেষ গত ২১ মে সাতসকালে ৩০ মিনিটের কালবৈশাখীর তান্ডবে কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় একজনের মৃত্যুসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে আগামী কয়েকদিনে পুনরায় তাপমাত্রা বেড়ে ঝড়ের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মধুমাস জ্যৈষ্ঠের প্রথম সপ্তাহের শেষেই মূলতঃ কালবৈশাখী ঝড় চেনারূপে ধরা দিয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলছেন, সাগর বর্তমানে স্বাভাবিক ও শান্ত অবস্থায় রয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিরাজমান রয়েছে। পরবর্তী দু’দিন বা আটচল্লিশ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। আর বর্ধিত পাঁচদিনের আবহাওয়ার অবস্থায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলে তিনি জানান। গতকাল রবিবার খুলনার মংলায় সর্বোচ্চ ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর দেশের সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাঁদপুর এলাকায়। চলতি মৌসুমে এ যাবত রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক চার ডিগ্রির ঘরে উঠেছিল।
এর আগে আবহাওয়ার তিন মাস মেয়াদী (মে থেকে জুলাই) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মে মাসে ভারী বৃষ্টিপাত ও নিম্নচাপের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কতিপয় স্থানে স্বল্প মেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে এবার জুন মাসের প্রথমার্ধেই সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বা বর্ষাকাল বিস্তার লাভ করতে পারে। এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিúাতের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তী জুলাই মাসেও স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার আলামত বিদ্যমান রয়েছে।
বিগত ১৯৯৭ সালের পর ২০১৯ সালের বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছিল দক্ষিণ চট্টগ্রাম। ভারী বর্ষণের পাশাপাশি উজান থেকে নদ-নদী দিয়ে নেমে আসা ঢলের পানিতে সড়ক-মহাসড়ক থেকে শুরু করে বাড়ি-ঘর ও মাঠ-ঘাট তলিয়ে যায়। মহাসড়কের ওপর দিয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হয় বানের পানি। টানা ১০ দিনের ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া, আনোয়ারার পাশাপাশি উত্তরের ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, বোয়ালখালী উপজেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ বাসিন্দাকে সপ্তাহকালেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দী অবস্থায় অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করতে হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-বান্দরবান ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক। সেসময় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, হালদা ও সাঙ্গু নদীর পানি কয়েকদিন ধরে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। একইভাবে এবারও ভারী বর্ষণের পাশাপাশি উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে দেশের অন্য অঞ্চলের পাশাপাশি চট্টগ্রামও বন্যার ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে আভাস দেয়া হয়েছে।