তানভীর মোকাম্মেলের ‘১৯৭১’ প্রামাণ্যচিত্রে মুক্তিযুদ্ধ

26

ড. মো. মোরশেদুল আলম

তানভীর মোকাম্মেল নির্মিত ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট দৈর্ঘ্যরে প্রামাণ্যচিত্র ১৯৭১ মুক্তি পায় ২০১১ সালে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ প্রামাণ্যচিত্র। নির্মাতা এ ছবি নির্মাণের জন্য মোট ৩৫০ ঘণ্টা শ্যুট করেছেন। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ প্রসঙ্গে তানভীর মোকাম্মেল বলেন, ‘১৯৭১ ছবিতে দুটি বিষয় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রথমত, যে বিষয়টি নিয়ে আমি কাজ করেছি তা হলো ১৯৭১ সালের ইতিহাস। আমরা লক্ষ্য করেছিলাম আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস অনেকটাই বিকৃত হয়ে যাচ্ছিল। আমরা যারা সেই সময়ের গণহত্যার সাক্ষী, তাদের ওই সময়ের যে মানসিক অবস্থা এবং ওই সময়ের মানসিক আঘাত আমাদের এখনো যেভাবে দগ্ধ করে, সেই ইতিহাসকে তো আমরা এত সহজে বিকৃত হতে দিতে পারি না। সে জন্য নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দায়িত্ববোধ থেকেই ছবিটির পরিকল্পনা করি।’
ব্যাকগ্রাউন্ডে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্ণনার পাশাপাশি পরিচালক মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত ১৫৬ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ’৭১-এর সক্রিয় রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সেক্টর কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা এবং উদ্বাস্তু মানুষ। এছাড়াও ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তা এবং সাধারণ ভারতীয় বাঙালির সাক্ষাৎকারও নেয়া হয়েছে যাঁরা সেই সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ তৎকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া ও যুদ্ধকৌশল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নির্মাতার আংশিক উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। যেখানে মাঝে মধ্যে নির্মাতার অফস্ক্রিন কমেন্ট পুরো সাক্ষাৎকারটিকে নেহাত প্রশ্নোত্তর সেশন থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। প্রামাণ্যচিত্রটি অংশগ্রহণমূলক এবং এক্সপোটিজম পদ্ধতিতে নির্মাণ করা হয়। অংশগ্রহণমূলক প্রামাণ্যচিত্রের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতা এবং তার সাবজেক্ট এ দুয়ের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়ায় গুরুত্বারোপ করা হয়। এজন্য এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাক্ষাৎকার যুক্ত করা হয়। আর ঐতিহাসিক ঘটনার বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার স্বার্থে যথেষ্ট পরিমাণে আর্কাইভাল ফুটেজ ব্যবহার করা হয়। সেই সাথে এক্সপোজিটরি পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ব্যাকগ্রাউন্ড বর্ণনার মধ্য দিয়ে আর্কাইভাল ফুটেজ ও স্থিরচিত্রের উপস্থাপন করা হয়। তাই এতে ব্যাকগ্রাউন্ড বর্ণনাকারীকে দেখা যায়নি।
প্রামাণ্যচিত্র ১৯৭১ দুটি অধ্যায়ে বিভক্ত। এ দুটি অধ্যায় সর্বমোট ২১টি ছোট ছোট অংশে উপস্থাপিত। যার মধ্যে কোনো কোনো অংশে আবার ভিন্ন ভিন্ন টাইটেল ব্যবহার করে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রামাণ্যচিত্রটির শুরু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্ণনার মধ্য দিয়ে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ইতিহাস উল্লেখের মাধ্যমে এ পটভূমির বর্ণনা শুরু হয়, যা প্রায় ২৩ মিনিট ধরে চলে। ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর বর্ণনা দিয়ে মূল আখ্যান শুরু হয়। আর এর পরিসমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার পর ভারত থেকে বাঙালি উদ্বাস্তু, নির্বাসিত অস্থায়ী সরকারের প্রত্যাবর্তন এবং ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এবং ‘চূড়ান্ত যুদ্ধ’ এ দুটি এপিসোডের মধ্যবর্তীতে উপস্থাপিত অন্যান্য এপিসোডগুলো হলোÑ ‘প্রাথমিক প্রতিরোধ’, ‘গণহত্যা দিকে দিকে’, ‘ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ’, ‘মুজিবনগর সরকার’, ‘মৃত্যু উপত্যকা’, ‘মুক্তিবাহিনী’, ‘প্রবাসী সরকার’, ‘তাহাদের কথা’, ‘বাধ্যতামূলক ধর্মান্তকরণ’, ‘নির্যাতনের নানা আলেখ্য’, ‘শরণার্থীরা’, ‘বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি’, ‘অপারেশন জ্যাকপট’, ‘মুজিব বাহিনী’, ‘রাজাকার’, ‘শিল্পীসমাজ’, ‘মুক্তিযোদ্ধারা’, ‘নৌ-কমান্ডার’, ‘বহির্বিশ্বের সংহতি’, ‘পাকিস্তানে আটকেপড়া বাঙালিরা’ এবং ‘বুদ্ধিজীবী হত্যা’। তথ্য, ঘটনা ও ইমেজের সমর্থনে এ প্রামাণ্যচিত্রে বিভিন্ন ধরনের মিউজিক্যাল আবহ ব্যবহার করা হয়েছে। আবদুল লতিফের কথা ও সুরে ‘দাম দিয়ে কিনেছি এই বাংলা, কারো দামে পাওয়া নয়’ গানটি টাইটেল সং হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ গানের ব্যবহার যথাক্রমে টাইটেল সং হিসেবে, চলচ্চিত্রটির সমাপ্তিতে কাস্টিং লাইন প্রদর্শনের সময় এবং ’৭১-এর বীরাঙ্গনাদের নিয়ে নির্মিত এপিসোডে মোট তিনবার করা হয়। ‘শরণার্থীরা’ এপিসোডে পরিচালক ‘শরণার্থী ৭১’ শিরোনামে তাঁর নিজের রচিত একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। কবিতাটির কয়েকটি লাইন এ রকম: ‘পিছনে ছিল নিকানো উঠোন থেকে ধবলী গাই, / তুলসী মঞ্চ তাঁত, লাউ মাচা, লাঙ্গল-জোয়াল, / মায়ের শীতলপাটি, চকচকে কাঁসার বাসন, / পুকুরের পাড়ে পিতার সমাধি, / মন্দির-মসজিদ, চিরচেনা গাঁয়ের সীমানা / তারা হেঁটেই ছিল।’ ২০ মিনিট ২৬ সেকেন্ড দীর্ঘ ‘শরণার্থীরা’ এপিসোডে শরণার্থীদের মানবেতর জীবনযাপনের বর্ণনা পাওয়া যায়। শরণার্থীর আশ্রয়দাতা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততার কিছু অজানা তথ্য ও উপলব্ধি প্রতিফলিত হয়েছে। বাংলাদেশের সব প্রান্তে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল তার এক নির্বাচিত অংশের দলিল এ পর্বটি।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সফল অভিযান চালায়। নৌকমান্ডো পাকিস্তানের বড় বড় যুদ্ধ জাহাজ যেমন: হরমুজ শিপ-এ বোমা সংযুক্ত করে বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৫ আগস্ট একযোগে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ৯টি এবং মংলা বন্দরে ৬টি জাহাজ ডুবিয়ে বন্দর দুটির চ্যানেল প্রায় অকেজো করে দেয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনী মুক্তিযুদ্ধকালীন আত্মঘাতী দল গঠন করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করে। বাঙালি নিধনের নিমিত্তে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য ১৯৭১ সালে রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে দেশে রাজাকার বাহিনী তৈরি করা হয়। খুলনা শহরের ‘ভূতের বাড়ি’ নামে পরিচিত আনসার ক্যাম্পে মওলানা ইউসুফের দেয়া প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু হয়। তাদের মূল কাজ ছিল মুক্তিবাহিনী, হিন্দু ও আওয়ামী লীগের লোকদের এবং তাদের বাড়িঘর চিনিয়ে দেওয়া, মেয়েদের তুলে নিতে সাহায্য করা এবং লুটপাট, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও জমিজমা কেড়ে নেয়া। জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগের অঙ্গসংগঠন হিসেবে গড়ে ওঠা রাজাকার বাহিনীর পাশাপাশি গড়ে উঠেছিল আলবদর ও আলশামস বাহিনী। যাদের কাজ ছিল শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরি করে তাঁদের হত্যা করা। ফুটেজ, নতুন ধারণ করা দৃশ্য এবং ফাদার রেগানের স্মৃতিচারণায় এদের কার্যক্রম এ প্রামাণ্যচিত্রে উপস্থাপন করা হয়েছে। পরিচালক ১৯৭১ প্রামাণ্যচিত্রের জন্যে এদেশের পুরো মানচিত্র জুড়ে দীর্ঘ এক ভ্রামণিক পরিক্রমার আয়োজন করেছেন। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসরদের আক্রমণ, অত্যাচার, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনার পাশাপাশি বাঙালিদের প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের চিত্রও অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে এ ছবিতে ওঠে এসেছে। এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরাঙ্গনা অধ্যায়টিও সাহস এবং সততার সাথে নির্মোহভাবে এতে প্রতিফলিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন রণাঙ্গন, মুক্তিযোদ্ধা, গণহত্যা, নারী নির্যাতন, শরণার্থীদের মানবেতর জীবনযাপন, যত্রতত্র স্তূপীকৃত লাশ, আকাশে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর অনবরত টহল প্রভৃতি বিষয় এতে প্রতিফলিত হয়েছে। এছাড়া চলচ্চিত্রে উপস্থাপিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ২৫ মার্চের আক্রমণ, এদেশীয় দোসরদের অত্যাচার, হিন্দু নিধন-নিগ্রহ ও ধর্মান্তকরণ, যুদ্ধক্ষেত্র বা রণাঙ্গন, বিদেশি সমর্থন-অসমর্থন ও শরণার্থী অধ্যায়গুলো ছিল তথ্যবহুল। তিনি এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা করেছেন, যা সচরাচর ইতিহাস পাঠে কম পরিলক্ষিত হয়। নির্মাতা প্রান্তিক মানুষের মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘তাহাদের কথা’ ও ‘শরণার্থী’ এপিসোড দুটির কথা। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাত্মক প্রভাবটি যে প্রান্তিক মানুষদের উপরও পড়েছিল, তা বোঝা যায় নারী ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণের মাত্রাটা দেখে। তবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বর্ণনায় তথ্যের কিছু ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। তেমনি শরণার্থী অধ্যায়টিতেও অসম্পূর্ণতা রয়েছে। কারণ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও ত্রিপুরা এই তিন রাজ্যে শরণার্থীদের আশ্রয় নেয়ার কথা এ চলচ্চিত্রে বলা হলেও আসাম ও মিজোরাম এ দুটি রাজ্যে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি এ চলচ্চিত্রে উপেক্ষিত ছিল।
চলচ্চিত্রের অবাঙালি অধ্যায়ে কয়েকজন বিহারি নেতার আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নির্মাতা; যা ছবির নিরপেক্ষতা ও নৈর্ব্যক্তিকতাকে সুদৃঢ় করেছে। চিত্রলেখা গুহর ভাষ্যপাঠ ও সৈয়দ সাবাব আলী আরজুর আবহ সংগীত চলচ্চিত্রটিকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। আনোয়ার হোসেনের চিত্রগ্রহণ ছিল সাদামাটা। নাহিদ মাসুদের শব্দগ্রহণ ও মহাদেব শীর সম্পাদনাও যথাযথ। নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলের চিত্রনাট্য অত্যন্ত সুগ্রন্থিত। প্রামাণ্যচিত্র ১৯৭১-এর সফলতার জায়গা হচ্ছে এটি একটি কথ্য ইতিহাসনির্ভর চলচ্চিত্র। এতে একজন পর্যবেক্ষকের বয়ান থেকে ইতিহাস জানার প্রক্রিয়ার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে থাকে ঘটনার সাক্ষী, অংশীদার এর মুখ থেকে সংগৃহীত ঘটনার বর্ণনা। কারণ এতে যুক্ত হয় মানবীয়তা। পরিচালক সেই মানবীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে নির্মাণ করেছেন ১৯৭১ চলচ্চিত্রটি। স্বাধীনতা যুদ্ধের নিখাদ বর্ণনার সাথে এতে যুক্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত প্রতিটি পক্ষের ব্যক্তিগত অনুভূতি, প্রত্যাশা-হতাশার ব্যঞ্জনা। একই সাথে এটি হয়ে উঠেছে মানুষের মনস্তাত্তি¡ক অবমুক্তির নিরাপদ পটভূমি । নিকট অতীতে মুক্তিযুদ্ধকালীন বিষয় নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হলেও পরবর্তী সময়ে একই বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে এক ধরনের স্থবিরতা পরিলক্ষিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাস্তবতাকে বহির্বিশ্বে জানানোর জন্য প্রামাণ্য চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্রগুলো এতটাই শক্তিশালী যে, সেগুলো কাগজে লেখা কথা ও বক্তব্যকে ছাপিয়ে গেছে। প্রতিটি প্রামাণ্যচিত্রে সে সময়ের বাস্তবতা আমাদের সম্মুখে মূর্ত হয়ে উঠে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ১৯৭১ তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ। পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল মুক্তিযুদ্ধের সেই অনুপুঙ্খ ইতিহাস তুলে ধরেছেন এই প্রামাণ্যচিত্রে। দীর্ঘদিনের গবেষণা ও পরিশ্রমলব্ধ এই চলচ্চিত্রে তিনি আদ্যন্ত ইতিহাসের প্রতি অনুগত থেকেছেন। যুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধকালীন সকল ঘটনা তিনি একের পর এক সাজিয়েছেন। সমগ্র বাংলাদেশের বধ্যভূমিগুলো তিনি ঘুরে ঘুরে অবলোকন করেছেন। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে সংশ্লিষ্ট ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। প্রায় চার ঘণ্টার এই প্রামাণ্যচিত্রে কালানুক্রমিকভাবে সাজানো ঘটনাবলি এবং তথ্যসন্নিবেশে এই ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি প্রামাণ্য দলিলে পরিণত হয়েছে।
লেখক: শিক্ষক- চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়