ঢাকায় যাচ্ছেন ৩ হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট

64

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন আগামীকাল। পরদিন হবে কাউন্সিল অধিবেশন। সম্মেলন সফল করতে ১২টি উপ-কমিটি নিজেদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সম্মেলনে যোগ দিতে চট্টগ্রাম থেকেই তিন হাজার নেতাকর্মী আজ রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিবেন। এরমধ্যে ৪৫০ জন কাউন্সিলর ও বাকিরা ডেলিগেট হিসেবেই সম্মেলনে যোগদান করবেন। ইতোমধ্যে সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা-বিরাজ করছে। উত্তর, দক্ষিণ ও নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সম্মেলন ঘিরে বাড়তি প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রায় এক হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট সম্মেলনে যোগদান করবে। এরমধ্যে কাউন্সিলর থাকবে ১১৭ জন। প্রত্যেক উপজেলা থেকে বাসে করেই নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাবেন। তারা নিজেরাই যাতায়াতের ব্যবস্থা করছেন।’
গত ১৫ ডিসেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীন এক সভায় বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটিতে যারা আছেন সবাই কাউন্সিলর হবেন। থানা আওয়ামী লীগ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, আহব্বায়ক, যুগ্ম আহব্বায়কবৃন্দ কাউন্সিলর হবেন। মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যরাও কাউন্সিলর হবেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অনুমোদন সাপেক্ষে সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, আহব্বায়ক-যুগ্ম আহব্বায়কবৃন্দ কাউন্সিলর হবেন। এ তালিকা শিঘ্রই কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, ‘আমরা তালিকা করেছি। আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবে কেন্দ্র থেকে কাউন্সিলর দিবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান। কেন্দ্র ২৮-২৯ লক্ষ লোকসংখ্যা হিসেবে কাউন্সিলর দিচ্ছে। আমাদের চাহিদা ২৩০ কাউন্সিলর। ইতোমধ্যে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব করেছি। কেন্দ্র থেকে এবার বলা হচ্ছে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট একই হবে। ঢাকা শহরের অবস্থানের বিষয় ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা ৫০০ ডেলিগেটের কথা বলেছি।’
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া পূর্বদেশকে বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই বঙ্গবন্ধু প্রেমীদের জন্য উৎসবের আমেজ। যে কারণে এ আয়োজন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। এবার দক্ষিণ জেলা থেকে ১০০-১১০ কাউন্সিলর ও প্রায় ৫০০ ডেলিগেট যাচ্ছে ঢাকায়। দক্ষিণ জেলার পক্ষ থেকে তূর্ণা নিশীতা ট্রেনের বগি ও গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। এছাড়াও স্বস্ব উপজেলা থেকেও নেতাকর্মীরা আলাদাভাবে সম্মেলনে যোগ দিবেন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময় দলের অধিকাংশ নেতার কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ছিলেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২০০৯ সালে সম্মেলনে সমালোচিতদের বাদ দিয়ে কমিটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনোকান্ডসহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডে দলের একশ্রেণীর নেতাদের উপর ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। যে কারণে ২০০৯ সালের পর এবারের কমিটিতেই বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন। গোয়েন্দা সংস্থা ও দলীয় জরিপ পর্যালোচনা করে এবারো বর্তমান কমিটির অর্ধেক নেতাকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন দলটি।
নেতাকর্মীরা জানান, এবার পদ হারাতে পারেন বর্তমান কমিটির অনেক নেতা। আবার নতুন করে যুক্তও হবেন কেউ কেউ। কমিটিতে চট্টগ্রামের নেতাদের আধিক্য থাকবে এমনটাই গুঞ্জন চলছে। এরমধ্যে গত কমিটিতে থাকা ড. হাছান মাহমুদ, আমিনুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া পদোন্নতি পেতে পারেন। উপদেষ্টা পরিষদেও চট্টগ্রাম থেকে নতুন কেউ যুক্ত হতে পারেন। যে কারণে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সম্মেলনকে ঘিরে বাড়তি আমেজ বিরাজ করছে।