ড্রেন নাকি মৃত্যুফাঁদ? জীবনের নিরাপত্তা চাই

20

মশিউর রহমান আবির

উন্নয়নের দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চারিদিকে কেবল উন্নয়নের বাতাস। এই যে রাস্তা, ফ্লাইওভার, ব্রিজ, মেন্ট্রোরেল, বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ আরও কত উন্নয়ন! এসব উন্নয়নের মাঝে আমরা অন্যরকম এক বাংলাদেশের রূপ দেখতে পাই। তবে আমার জীবন যেখানে ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে আমার জীবন বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেই ড্রেন কেন খোলামেলা? আমাদের ড্রেন দরকান। ড্রেন না থাকলে এতদিনে চারিদিকে সাগর হয়ে যেত। কিন্তু সেই ড্রেন কেন মৃত্যুফাঁদ হয়ে দাঁড়বে? গত ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় ড্রেনে পড়ে সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া (২০) নামের আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) একজন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সাহসী কর্মীদের দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টায় তাকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু জীবিত নয়, মৃত। এর আগে ২৫ আগস্ট চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় একইভাবে সালেহ আহম্মেদ (৫৫) নামের এক সবজী ব্যবসায়ী নিখোঁজ হয়েছিল। যার লাশটা পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। এক মাসের ব্যবধানে এভাবে দুটি মানুষের প্রাণ চলে গেল, এই দায় কার? এটা প্রশ্ন থেকে যায়। ড্রেনগুলোতে কেন ঢাকনা দেওয়া হয়নি এটাও প্রশ্ন থেকে যায়। উন্নয়ন হচ্ছে, হতে থাকবে। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। তবে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তারা কতটুকু গুরুত্ব দিয়ে কাজগুলো করছেন কিংবা কোনো গাফিলতির রেশ আছে কি-না এ নিয়ে তদন্ত করা উচিত। এখন শুধু চট্টগ্রামবাসী নয়, আমরা পুরো বাংলাদেশবাসী চাই এমন যত মৃত্যুফাঁদ আছে সবগুলোতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। প্রতিটা ড্রেনে ঢাকনা লাগানো হোক। নয়তো সাদিয়া কিংবা সালেহ আহম্মদের মতো আরও অনেকগুলো জীবন চলে যেতে পারে শরবতের বদলে ড্রেনের পানি খেতে খেতে। যা কিছুতেই মানানসই নয়। সাদিয়ার মতো আর কোনো দেশের সম্পদ ড্রেনের মাঝে হারিয়ে যাক সেটা আমরা চাই না।
সালেহ আহম্মদের মতো খুঁটি ভেঙে একটি সুন্দর পরিবারে অন্ধকার নেমে আসুক সেটাও আমরা চাই না। আমরা আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই, জীবনের নিরাপত্তা।