ডুলাহাজারার সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুলের বিরুদ্ধে মামলা

31

চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল এহেছান চৌধুরী সাইফুলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদাদাবির অভিযোগে আদালতে একটি নালিশি মামলা করা হয়েছে। আপন চাচা ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরীর পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখল পরবর্তী দখল ছাড়তে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন হুমায়ুন কবির নামে একব্যক্তি।
মামলার বাদি হুমায়ুন কবির চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর সোনাশাহ মাজার সড়কের বাসিন্দা। তিনি আমোক্তারনামা মূলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে ভুক্তভোগী আনোয়ারুল হক চৌধুরীর সহায় সম্পদ দেখভাল করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আদালতের বিচারক বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি) নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মো. হেফাজ উদ্দিন। এছাড়া আগামী ১৩ অক্টোবর আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বলেও জানান তিনি।
মামলার বাদি হুমায়ুন কবির শনিবার দুপুরে চকরিয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ডুলাহাজারা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল এহেছান চৌধুরী সাইফুল তার চাচা ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরীর সম্পত্তি জবরদখল পরবর্তী দখল ছাড়তে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করেন। এ ঘটনায় গত ১৭ জুলাই তিনি আদালতে মামলা করেন। এরপর থেকে সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুলের লোকজন তাকে মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ডুলাহাজারার পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামের মরহুম বশির আহমদের ছেলে ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরী একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে থাকেন। সেই সুবাদে তার অংশের পৈত্রিক সব সম্পদ আপন ভাতিজা সাইফুলকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেন। ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর হরি রঞ্জন নাথ নামের একব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি দোকানঘর ক্রয় করেন ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরী। তাও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেন সাইফুলকে।
মামলার আর্জিতে বাদী দাবি করেন, হরি রঞ্জন নাথ থেকে কেনা দোকানটি ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর স্থানীয় একজনকে সেলামির ভিত্তিতে ভাড়া দেন ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরী। কিন্তু পৈত্রিক সম্পত্তির পাশাপাশি ওই দোকানটিও জোরপূর্বক দখলে নেন সাইফুল। পরে দোকানটি ছেড়ে দিতে বললে চাচার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করেন সাইফুল।
ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরীর ভাই আজিজুল হক চৌধুরী বলেন, ভাতিজা সাইফুলকে ছোটবেলা থেকেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরী অর্থবিত্ত, মেধা, শ্রম বির্সজন দিয়েছেন। নিজের ছেলে সন্তান না থাকায় ভাতিজাকে খুবই ভাল বাসতেন। অথচ সেই ভাতিজাই এখন সব ভোলে চাচার সম্পদ দখলে মেতে উঠেছে।
আজিজুল হক চৌধুরী আরও বলেন, ভাতিজা সাইফুল বর্তমানে ডা. আনোয়ারুল হক চৌধুরীর পাশপাশি আমার সহায় সম্পদও জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আমার পৈত্রিক অংশের বেশ কিছু জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে। তার নানা হুমকি-ধমকির মুখে আমি প্রায় একবছর এলাকায় যেতে পারছি না।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল এহেছান চৌধুরী সাইফুল বলেন, আমাদের পরিবারের মধ্যে পৈত্রিক সহায় সম্পদের ভাগ-বন্টন হয়নি। বৈঠকে বসলে দেখা যাবে আনোয়ারুল হক চৌধুরী আমাদের অংশের তুলনায় অনেক বেশি জমি নিজের নামে খতিয়ান করে নিয়েছেন। তাকে স্থানীয়ভাবে ও পারিবারিকভাবে বৈঠকে বসতে অনুরোধ করলে তিনি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া কতিপয় মহলের ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।
চাচার সম্পত্তি দখল ও চাঁদাদাবির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, দোকানটি আমার কেনা সম্পত্তি। এটি আমি বৈধভাবে ভোগদখলেও আছি। আমাদের পরিবারের সবার মতো আমি এখনও আমার চাচাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তিনি পরিবারের অন্যদের বঞ্চিত করে একাই সাতকানি পরিমাপের একটি পুকুর নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। তারপরও আমি চাই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক।