‘ডিআর কঙ্গোতে ডিসেম্বরের দাঙ্গায় নিহত কয়েকশ’

35

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে গত বছরের ডিসেম্বরে দুটি আলাদা গোষ্ঠীর মধ্যে তিনদিনের দাঙ্গায় কয়েকশ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার জাতিসংঘের একটি তথ্য অনুসন্ধানী দলের মুখপাত্র দেশটির উত্তরপশ্চিম এলাকায় ১৫টি কবরস্থান ও ৪৩টি একক কবর দেখার কথা জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে মাই-নদোম্বে প্রদেশের উম্বি শহর ও এর আশপাশে বুনুনু ও বাতেন্দে গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে ওই দাঙ্গা হয় বলে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
১৬ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সহিংসতা অসংখ্য বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে হাজার হাজার লোককে। দাঙ্গায় ভোটিং মেশিন ও অন্যান্য নির্বাচনী সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জেরে কর্তৃপক্ষ ৩০ ডিসেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এলাকাটির ভোট স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর তিনদিনের ওই সংঘর্ষে ৮৯০ জন নিহত হয়েছে বলে ‘বিশ্বস্ত সূত্রে’ খবর পাওয়ার কথা জানালে উম্বিতে ‘গণহত্যা’ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়।
“ভয়াবহ এ সহিংসতার সুষ্ঠু ও বিস্তৃত তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি,” সেসময়ই বলেছিলেন বৈশ্বিক সংস্থাটির শীর্ষ মানবাধিকার কর্মকর্তা মিশেল ব্যাশেলেট।
পরে জাতিসংঘের অর্গানাইজেশন স্টাবিলাইজেশন মিশন ইন কঙ্গো (এমওএনইউএসসিও) উম্বি ও কাছাকাছি শহর বোনগেন্দেতে একটি তথ্য অনুসন্ধানী দল পাঠায়। তারাই ওই কবরস্থানের সন্ধান পান বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র ফ্লোরেন্স মার্শাল। মঙ্গলবার টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “আপনি যদি মূল সড়ক ধরে হেঁটে যান, তাহলেও কবরগুলো দেখতে পাবেন।” দাঙ্গায় ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান মার্শাল। এর আগে রাজধানী কিনশাসায় রয়টার্সকে দেওয়া এক মন্তব্যে তিনি বলেন, “দুঃসহ ওই পরিস্থিতিতে নারী ও শিশুসহ কয়েকশ মানুষ হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন।”
দেশটির রাজধানী কিনশাসায় জাতিসংঘের যৌথ মানবাধিকার দপ্তরের পরিচালক আবদুল আজিজ থিওয়ি বলেন, রেডক্রসের কর্মী ও ঘটনার সময় পালিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা ফিরে এসে ওই কবরগুলো খুঁড়ে নিহতদের সমাহিত করেন।
“প্রায়ই আপনি যখন গণকবর নিয়ে কথা বলবেন, সবাই হরেদরে মৃত মানুষদের একটি গর্তের মধ্যে রেখে চাপা দেওয়ার কথাই ভাবে। এক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেনি,” টেলিফোনে বলেছেন থিওয়ি। হত্যাকান্ডের জন্য কারা দায়ী কর্মকর্তারা এখনো তা নিশ্চিত হতে পারেননি বলেও জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। মার্শাল বলছেন, স্থানীয় এক প্রধানকে সমাহিত করা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয় এবং পরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে।
দাঙ্গার সময় উম্বির বেশিরভাগ বাসিন্দাই কঙ্গো নদী পেরিয়ে প্রতিবেশি রিপাবলিক অব কঙ্গোর ব্রাজাভিল শহরে আশ্রয় নেয়। সেসময় উম্বি ‘ভুতুড়ে শহরের মতো শান্ত’ হয়ে পড়েছিল বলে জানান থিওয়ি।