ডাম্পিং এলাকা থেকে ২০ ট্রাক আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য পাচার!

22

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি নিষিদ্ধ মিট অ্যান্ড বোন মিল বা এমবিএম এর চালান নিয়ে আসে একটি অসাধু চক্র। কাস্টমসের তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নানা সময়ে এসব চালান জব্দের খবরও প্রকাশিত হয়েছে। জব্দকৃত চালান আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধ্বংস করা হয়। এরকম অনেক চালান নগরীর হালিশহর আনন্দবাজার ল্যান্ডফিল এলাকায় ডাম্পিং করে ধ্বংস করে কাস্টমস। কিন্তু সেখান থেকে একটি চক্রের রাতের আঁধারে পণ্যবাহী ট্রাকে করে অন্যত্র পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এবার সেই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
এদিকে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হালিশহরের আনন্দবাজার ল্যান্ডফিল এলাকায় চট্টগ্রাম কস্টমস ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মাছ ও হাঁস-মুরগির আমদানি নিষিদ্ধ খাবারসহ প্রাণীর বর্জ্য ও হাড়যুক্ত মিট অ্যান্ড বোন মিল বা এমবিএম বোঝাই ১০টি ট্রাক জব্দ করে। কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ আমদানি নিষিদ্ধ এমবিএম আনন্দবাজার ল্যান্ডফিলে ডাম্প করেছিল কাস্টমস। কিন্তু সেখান থেকে একটি চক্র রাতের আঁধারে অন্যত্র পাচারের চেষ্টা করছিল। অভিযানে ১০ ট্রাক জব্দ করা হলেও এর আগে এমবিএমসহ অন্তত ২০ ট্রাক অন্যত্র পাচারে সক্ষম হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, শুকরসহ গবাদিপশুর হাড়গোড়ে তৈরি মাছ ও মুরগির খাবার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের খাবার খেয়ে যেসব মাছ-মুরগি বড় হবে তা খেলে মানুষের ক্যান্সারসহ জটিল রোগ হতে পারে। আর এজন্য সরকার এ ধরনের ফিড আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
তাছাড়া সাধারণত উন্নত দেশগুলোতে গবাদিপশু বিশেষত শুকরের বর্জ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে মুরগি এবং মাছের খাবার বানানো হয়। পৃথিবীর অনুন্নত দেশগুলোতে এসব পণ্য রপ্তানি করা হয়। এ সমস্ত ক্ষতিকর খাবার খেলে একটি মুরগির বাচ্চা দুই সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আকার ধারণ করে। মাছের ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ খাবার খাওয়ার পরপর মাছগুলো দ্রুত বড় হতে থাকে। পরবর্তীতে এসব মুরগি, ডিম এবং মাছ খাবার পর মানুষের শরীরে নানা রকম রোগব্যাধি দেখা দেয়।
এদিকে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিট অ্যান্ড বোন মিল বা এমবিএম আমদানি নিষিদ্ধ করে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এমবিএম যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল ও কানাডায় নিষিদ্ধ হলেও, দেশগুলো থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনার তারেক হাসান জানান, কাস্টমস আইন অনুযায়ী আনন্দবাজার ল্যান্ডফিল এলাকায় এমবিএম ধ্বংস করার জন্য ডাম্প করা হয়েছিল। কিন্তু একটি চক্র সেখান থেকে তা আবার বাইরে পাচার করছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আর কিছু ট্রাক বাইরে চলে গেছে বলে আমরা জেনেছি। আমাদের অভিযান চলছে।