ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান ফিলিস্তিনিদের

29

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন। গত মঙ্গলবার ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি বা ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ নামের ওই প্রস্তাবের সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফিলিস্তিনের রাজনীতিবীদ ও অ্যাক্টিভিস্টরা। ট্রাম্পের ইহুদি ধর্মাবলম্বী জামাতা জ্যারেড কুশনারের তত্ত্বাবধানে খসড়াকৃত ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামের ওই পরিকল্পনা ২৮ জানুয়ারি প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে এটি উন্মোচনকালে ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিরা দারিদ্র্য ও সহিংসতার মধ্যে বাস করছে।
যারা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়াতে চায় তাদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে তারা ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে, শান্তির পথে ইসরায়েল আজ বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলি ভূখন্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি দখলদারিত্বের ফলে শরণার্থীতে পরিণত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের অংশবিশেষ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নামমাত্র একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে; যে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী থাকবে না।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট ফাকরি আবু দায়েব বলেছেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) যে অংশ তাদের (ইসরায়েল) দিয়েছেন, ওই অংশের মালিকানা তার নেই। যাদের দিয়েছেন, তাতে তাদেরও কোনও অধিকার নেই। নতুন বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ট্রাম্প ইতিহাসের পুনাবৃত্তি করছেন, এতে এটা স্পষ্ট।’ ১৯১৬ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য তথাকথিত আবাসভূমি বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ব্রিটেনের অবস্থানের কথা ঘোষণা করেন। এটা ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে পরিচিত। বেলফোর ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করে আবু দায়েব বলেন, ‘এই চুক্তি কেবলই ইসরায়েলের স্বার্থ নিশ্চিত করবে, এটা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মূলভিত্তি, জেরুজালেম, জর্ডান উপত্যকা ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আমরা এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছি এবং এটার বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবো।’ ফিলিস্তিনের সাবেক মন্ত্রী জিয়াদ আবু জায়েদ বলেছেন, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের কাছে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘ আমরা কখনও রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমের দাবি ছাড়বো করবো না। এমনকি জর্ডান বা পশ্চিম তীরের অন্য কোনও স্থানকেও মেনে নেবো না। ফিলিস্তিনের অধিকার ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর ভাগ করার এখতিয়ার নেই।’